দুর্গাপুর, 4 জুলাই : অভিযোগের যেন শেষ নেই । দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ তুলে 500 জন অস্থায়ী কর্মী প্রায় প্রতিদিন কাজ ছেড়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কাজ বন্ধ করে আন্দোলন নয় । অথচ আন্দোলনের জেরে হাসপাতালে প্রতিদিন স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে ৷ ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে রোগীদের ।
লকডাউনের সময় থেকেই দুর্গাপুরের বিজড়াতে ওই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন । অস্থায়ী প্রায় 500 জন কর্মীকে মাসিক 16 দিন করে কাজ করানো হচ্ছে । অনেককে আবার ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে । কর্মীদের সময়মতো বেতন দেওয়া হচ্ছে না ৷ তাঁদের রীতিমত মানসিক ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে । এমন অভিযোগ তুলে বেসরকারি ওই হাসপাতালে প্রায় 500 জন অস্থায়ী কর্মী কাজ বন্ধ করে দিয়ে 15 জুন আন্দোলনে জন্য রাস্তায় নামেন । এই সমস্ত ইস্যুতে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ফের আবার গতকাল থেকে দুজন অস্থায়ী কর্মীকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেছেন প্রায় 500 জন অস্থায়ী কর্মী । রফিক এবং বাচ্চু পাশওয়ান এই দুইজন অস্থায়ী কর্মীকে বসিয়ে দেওয়া নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত । শুধু তাই নয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে এখন তারা বাইরে থেকে কর্মীদের নিয়ে এসে হাসপাতালে কাজ করাচ্ছে ।
বেসরকারি হাসপাতালের হাউজ়কিপিং-এর কর্মী চন্দ্রা দত্ত বলেন , "এই হাসপাতালে বেনিয়ম চলছে । হাসপাতালে বর্তমানে রোগী আসছে না এই অজুহাতে 20 জন অস্থায়ী কর্মীকে অনেক আগেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে । তারপরও যারা ম্যানেজমেন্টের কাছে আমাদের ন্যায্য দাবি দাওয়া নিয়ে লড়াই করছিল সেই বাচ্চু পাশওয়ান ও রফিককে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যায় ভাবে । রোগীর অভাবে আমাদের মাসে কুড়ি দিনের বেশি ডিউটি করতে দেওয়া হচ্ছে না । অথচ বাইরে থেকে লোক এনে এরা কাজ করাচ্ছে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্ত কিছুতে আমাদের অন্ধকারে রাখছে । কেন আমাদের মাসে মাত্র কুড়ি দিন কাজ করানো হচ্ছে ? বাইরের লোক এনে কাজ করানোর প্রয়োজনীয়তা কোথায়? আমাদের বাইরে এসে এই কথাটাই বুঝিয়ে দিয়ে যাক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।"
এই বেসরকারি হাসপাতাল যে সংস্থার দ্বারা পরিচালিত সেই সংস্থার ডিরেক্টর সুদর্শনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান , "চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে । স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ করে এভাবে আন্দোলন করা যায় না । নিয়মিত আন্দোলনের জায়গা হয়ে গেছে এই হাসপাতাল । যে দুজনকে কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তারা দুর্ব্যবহার করেছিল চিকিৎসকদের সাথে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে । তাই তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে । কিন্তু যারা এইভাবে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করে আন্দোলন করছে তারা মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ অমান্য করছে । কারণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কাজ বন্ধ করে কোনও আন্দোলন নয় । 800 শয্যা বিশিষ্ট আমাদের এই হাসপাতাল জেলার গর্ব । মেডিকেল কলেজ রয়েছে, নার্সিং কলেজ রয়েছে । সুতরাং যারা আজকে আন্দোলন করছে যদি তাদের কাজ না থাকে তাহলে তারা ভালো থাকবে তো ? আমরা বিষয়টিকে নিয়ে প্রশাসনের উচ্চতম আধিকারিকদের জানাব ।"