আসানসোল, 11 নভেম্বর: কবি নজরুলের 'কারার ঐ লৌহ কপাট' গানটির নতুন করে সুরারোপন করেছেন প্রখ্যাত সুরকার এআর রহমান । আর তা নিয়েই উঠেছে প্রতিবাদের ঝড় । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি হিন্দি ছবি 'পিপ্পা'তে ব্যবহৃত হয়েছে ওই গান ৷ আর গানটি প্রকাশিত হতেই নিন্দায় সরব হয়েছে নানা মহল ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্বুদ্ধ করতে 'কারার ঐ লৌহ কপাট' সৃষ্টি করেছিলেন নজরুল ৷ যে গানের শব্দ ও সুর শুনলে আজও রক্ত গরম হয়, আগুনের ফুলকি ছোটা সেই গানের সুর এআর রহমান কেন এরকম আমূল বদলে ফেললেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ ওই গানের কথা ও আবহের মানে এবং ইতিহাস রহমান আদৌ বুঝতে পেরেছেন কিনা তা নিয়েই সরব হয়েছেন অনেকে ৷ কাজী নজরুল ইসলামের গানের এভাবে সুর বদল নিয়ে ক্ষুব্ধ বিদ্রোহী কবির পরিবারের সদস্যরাও ৷ প্রতিবাদের আঁচ ছুয়েছে কবিতীর্থ চুরুলিয়ায় কবি পরিবারের মধ্যেও ।
আসল গান গেয়ে এবং নিন্দাসূচক বার্তা দিয়ে কবি নজরুলের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় কবি পরিবারের সদস্যরা ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলেন ৷ কাজী নজরুল ইসলামের ভ্রাতুষ্পুত্র তথা নজরুল অ্যাকাডেমী চুরুলিয়ার সভাপতি রেজাউল করিম জানালেন এই গানের ইতিহাসের কথা । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবীর অনুরোধে তাঁর 'বাঙলার কথা' পত্রিকায় জন্য নজরুল ইসলাম "ভাঙার গান" শীর্ষকে এই গান লিখেছিলেন । রেজাউল করিম বলেন, "এই গানের দেশমুক্তির আন্দোলনে বিপ্লবীদের উদ্বুদ্ধ করেছিল । শুধুমাত্র ভারতবর্ষ নয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এই গান যোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করে । দুই দেশের স্বাধীনতার জন্য যে কয়টি দেশাত্মবোধক গান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এই 'কারার ঐ লৌহ কপাট' গানটি।"
এআর রহমানের সুরারোপিত গানটি শুনেছেন ? উত্তরে কাজী নজরুল ইসলামের ভ্রাতুষ্পুত্র কাজী রেজাউল করিম জানালেন, এ আর রহমান অনেক বড় মাপের সঙ্গীত শিল্পী । কিন্তু উনি এই গানটিকে বরবাদ করে দিয়েছেন । গানের সম্পূর্ণ ভাবধারা পালটে দিয়েছেন তিনি, এটা কিন্তু আগামীর কাছে বিপজ্জনক। যদি এখনই প্রতিবাদ না হয় তাহলে এরকম ভাবে নষ্ট হয়ে যাবে বহু গান। রবি ঠাকুরের গানকেও চেষ্টা করা হয়েছে এইভাবে বিকৃত করার। প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি কেউ। মনে রাখতে হবে বাঙালি এখনও বেঁচে আছে ।