কলকাতা, 27 জুন: কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশে সোমবার ত্রিপুরায় গেলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী, গৌরব গগৈ এবং নাসির হোসেন । তাঁরা রবিবারের হামলায় জখম ও ক্ষতিগ্রস্ত কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গেও দেখা করেন । কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মানিক সাহা ৷
এ দিন সাংবাদিকদের অধীর চৌধুরী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হয়েছে । তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন । পাশাপাশি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি (Tripura By poll results 2022)।
এই ঘটনা ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের প্রকৃত রূপ তুলে ধরেছে বলেও অভিযোগ করেন অধীর ৷ ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে বলে অভিযোগ তাঁর ৷ তিনি বলেন, চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের তিনটি আসনে জয়লাভ করেও এক আসনে হারের ধাক্কা মেনে নিতে পারেনি বিজেপি । যে কারণে বিজেপির দুষ্কৃতী বাহিনী কংগ্রেস অফিসে ও কংগ্রেস নেতাকর্মীদের উপর আক্রমণ চালায় । আগরতলা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি জায়গা মিলিয়ে 15 জনের বেশি গুরুতর জখম হয়েছেন । সবাইকে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ।
রবিবার ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহার উপর দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে (Adhir visits Tripura)। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আজ তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দলকে ত্রিপুরায় পাঠায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড । এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল কংগ্রেস কর্মীদের উপর নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন ৷ কেসি ভেনুগোপাল এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, আগরতলায় কংগ্রেস দলের প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মন বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর কংগ্রেস ভবনে হামলা চালানো হয় । বিজেপির গুন্ডা বাহিনী ত্রিপুরার প্রদেশ সভাপতি বীরজিৎ সিনহা-সহ অন্যান্যদের উপর হামলা চালায় (Adhir Ranjan Chowdhury visits Tripura)।
ত্রিপুরায় কংগ্রেস প্রতিনিধি দল আরও পড়ুন:Tripura By-poll Result: সুদীপ জিততেই আগরতলার কংগ্রেস অফিসে হামলা, মাথা ফাটল সভাপতির; কাঠগড়ায় বিজেপি
ভেনুগোপালের অভিযোগ, "রবিবার ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে বিজেপির গুন্ডাবাহিনী যখন হামলা চালায়, তখন পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে তা দেখেছে ৷ এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে, পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে । আমাদের পদাধিকারীদের উপর হামলা চলে । গেরুয়া গুন্ডাবাহিনীকে অবাধে রড ও লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখেও কিছু বলা হয়নি । হামলার পর পিসিসি সভাপতি আহত হয়েছেন । তিনি হাসপাতালে ভর্তি ।"
তাঁর আরও অভিযোগ, "এর আগে বিজেপির গুন্ডারা সুদীপ বর্মনকে নির্দয় ভাবে আক্রমণ করেছিল । তিনি গুরুতর জখম হন । মরিয়া বিজেপি জনগণের রায় মেনে নিতে অক্ষম । তারা আবারও কংগ্রেসের অফিস এবং পদাধিকারীদের উপর হামলা চালাচ্ছে । এরই প্রতিবাদে আমরা বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করছি । এই হামলাগুলির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি । রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা সামলাতে না পারলে রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজন হবে । কর্তৃপক্ষকে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং কংগ্রেস পার্টি অফিস ও পদাধিকারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আহ্বান জানাই ।"
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে ঝামেলার জেরেই বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরেছিলেন সুদীপ রায়বর্মন ৷ এবারের বিধানসভা উপনির্বাচনে তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের বড় বাজি ৷ সেই বাজি জিতে যায় কংগ্রেস ৷ আগরতলায় জয়ী হন সুদীপ ৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা তাঁকে এই জয়ের জন্য অভিনন্দনও জানান ৷ কিন্তু, তারপরই কংগ্রেসের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷ একদল দুষ্কৃতী কার্যালয়ের ভিতর ঢুকে যায় ৷ কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর করে তারা ৷ সেখানে উপস্থিত কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীদের মারধর করে ৷ তাতেই জখম হন বীরজিৎ ৷ তাঁর মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে ৷ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এই হামলার জন্য বিজেপি-কে কাঠগড়ায় তুললেও তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ৷