সফল অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতালের শান্তিপুর, 21 মে: ইতিমধ্যেই চারবার গর্ভপাত হয়েছে ৷ রক্তে ইনফেকশন ও জরায়ুতে পার্টিশান ৷ পাশাপাশি গ্রেট টু এন্ডোমেট্রোসিস আক্রান্ত প্রসূতি ৷ অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার করে সুস্থ শিশুর জন্ম লাভ করিয়ে নজির গড়ল সরকারি হাসপাতাল । শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ৷ প্রসূতির সফল অস্ত্রোপচার করেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারি ।
জানা গিয়েছে, নদিয়ার বাদকুল্লার বাসিন্দা গৃহবধূ মুনমুন সরকার ৷ বয়স 28 বছর । সাত বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় । বিয়ের পর চারবার গর্ভবতী হন তিনি । কিন্তু প্রত্যেকবার কখনও তিন মাস তো কখনও বা পাঁচ মাসে গর্ভে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় শিশুর । একাধিক জায়গায় চিকিৎসা করেও কোনও সুরাহা পাচ্ছিলেন না । অবশেষে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা । এরপর বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষা করে তাঁর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা । অবশেষে গতকাল রাতে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভরতি হন প্রসূতি । ওইদিন সফল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে সাড়ে তিন কেজি ওজনের পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মুনমুন ।
এ বিষয়ে চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারি বলেন, "ওই গৃহবধূর পরিবার নিম্নবিত্ত । আর্থিক সচ্ছলতা না থাকার কারণে আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়ে শান্তিপুর সরকারি হাসপাতালে ভরতি করিয়ে অস্ত্রোপচার করি । প্রথম থেকেই ওই গৃহবধূর রক্তে ইনফেকশন ছিল । গতকাল রাতে যখন অস্ত্রোপচার করি তখন দেখতে পাই জরায়ুতে একটি পার্টিশন রয়েছে ছোট । যার কারণে এর আগেও একাধিকবার সন্তান এসেও গর্ভাবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান আমাদের । পুরোপুরি সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে । বর্তমানে মা এবং ছেলে দু'জনেই সুস্থ রয়েছে ।"
পাশাপাশি তিনি বলেন, "নার্স থেকে শুরু করে অজ্ঞানের ডাক্তার এবং হাসপাতাল সুপার সকলেই সাহায্য করেছেন আমাকে ।" কারণ হিসাবে তিনি জানান, সরকারি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যে ধরনের পরিকাঠামো থাকে তাতে এই ধরনের অস্ত্রোপচার যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল । অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর সুস্থভাবে পুত্রসন্তান পেয়ে খুশি মুনমুন সরকারের পরিবার । প্রসূতির স্বামী বাপি সরকার বলেন, "আমরা একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় বহু চিকিৎসা করিয়েছি । চারবার বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে যথেষ্ট হতাশ হয়ে পড়েছিলাম । অবশেষে ডাক্তার পবিত্র ব্যাপারির সঙ্গে যোগাযোগ হয় আমাদের । তার নির্দেশ মেনেই আমরা চিকিৎসা করিয়েছি এবং বর্তমানে আমার স্ত্রী ও পুত্রসন্তান দু'জনেই ভালো রয়েছে ।"
আরও পড়ুন:পিতৃত্বের পরিচয় স্বীকার করতে 2 লাখ টাকা দাবি, 8 মাসের কন্যাকে নিয়ে থানায় দিশেহারা মা