Critical Operation in Shantipur: জরায়ুর বদলে ডিম্বনালীতে ভ্রূণ, জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য শান্তিপুর স্টেট জেনারেলে

উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই সফল জটিল অস্ত্রোপচার ৷ স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারির তত্ত্বাবধানে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন শান্তিপুরের গৃহবধূ ৷ জরায়ুর বদলে ডিম্বনালীতে ভ্রূণের অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছিল রোগীর জীবন ৷

শান্তিপুর, 12 সেপ্টেম্বর: বেশ কয়েকদিন ধরেই পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন নদিয়ার শান্তিপুরের রাজপুত পাড়ার বাসিন্দা সরস্বতী সরকার ৷ ইউএসজি করানোর পর সামনে আসে পেটে ব্যথার আসল কারণ ৷ জানা যায় তিনি সাড়ে তিন মাসের গর্ভবতী ৷ অথচ যুবতী নিজেও তা বুঝতে পারেননি ৷ না বোঝার আরও একটা বড় কারণ, গর্ভে যেখানে ভ্রূণের বেড়ে ওঠার কথা, সেখানে নয়, বরং পেটের ডানদিকে আংশিক ডিম্বনালীতে সেই ভ্রূণের অস্তিত্ব পাওয়া যায় ৷ যা একজন গর্ভবতী মহিলার কাছে জীবন ঝুঁকির সমান ৷ তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত হয় জটিল এই অস্ত্রোপচার করার ৷ উপযুক্ত পরিকাঠামো না-থাকা সত্ত্বেও সরকারি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সফলভাবেই সম্পন্ন হল এই অস্ত্রোপচার ৷ নতুন জীবন ফিরে পেয়ে খুশি সরস্বতীও ৷

স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারি বলেন, "এই অস্ত্রোপচারকে জটিল বলার কারণ রয়েছে ৷ প্রথমত রোগীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ, যা সহজে পাওয়া যায় না ৷ দ্বিতীয়ত, রোগীর পেটে যেখানে ভ্রূণের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল, সেটা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা ৷ তাছাড়া অপারেশনের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকাঠামো নেই হাসপাতালে, নেই আইসিইউ, নেই ব্লাড ব্যাংক ৷ তাই একটু হলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় এই ধরনের অস্ত্রোপচার।"

তিনি আরও বলেন, "সরস্বতী সরকার আগে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ৷ তিনি আবার গর্ভবতী হন ৷ কিন্তু তাঁর পেটে বাচ্চা না-হয়ে, জরায়ুর ডিম্বনালীতে ভ্রূণের অস্তিত্ব পাওয়া যায় ৷ সাধারণত, আমরা জানি সন্তান জরায়ুতে বেড়ে ওঠে ৷ কিন্তু তার পরিবর্তে কোনওভাবে ডিম্বনালীতে শিশুর ভ্রূণ আসলে যে কোনও সময়ে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে ৷ অথবা মায়ের প্রাণহানিও হতে পারে ৷ তার জন্যই অস্ত্রোপচার জটিল হয়ে দাঁড়ায়।" তিনি জানান, রোগীর রক্তের গ্রুপ 'এ' নেগেটিভ ৷ সচরাচর এই ব্লাড গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায় না। যেহেতু এহেন অপারেশনের জন্য রক্ত যখন-তখন প্রয়োজন হয়ে পড়ে, সেই কারণেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই অস্ত্রোপচার।

গৃহবধূ সরস্বতী সরকার জানিয়েছেন, তাঁর যে এই রকম জটিল অপারেশন হবে, তিনি জানতেন না ৷ যাতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে না-পড়েন, সেই কারণে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এই অপারেশন করা হয়েছে ৷ তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন ৷