হাঁসখালি, 26 জুন : কোরোনা সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসকরা বলছেন বারবার হাত স্যানিটাইজ় করার কথা । কিন্তু আমরা চোখ-মুখ স্যানিটাইজ় করতে পারছি কি ? মূলত সেই কথা মাথায় রেখে ঘরে বসেই এই যন্ত্র আবিষ্কার করলেন শুভময় পাল, যা কিনা নিজে থেকেই আপনার সারা শরীর স্যানিটাইজ় করবে । পাঠানো হয়েছে পেটেন্টের জন্য, মিলেছে অনুমতিও ।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই এখন কোরোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় । তার সঙ্গে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কথাও বলছেন চিকিৎসকরা । অর্থাৎ ঘনঘন হাত স্যানিটাইজ় করতে হবে । অনেকেই পালন করছেন সেই নিয়ম । যেখানেই যাচ্ছেন, সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন স্যানিটাইজ়ার । ঘনঘন হাতে মেখে নিচ্ছেন । কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন চোখ নাক মুখ দিয়েও হতে পারে কোরোনার সংক্রমণ । তাহলে উপায় ? মূলত সেই কথা মাথায় রেখেই ঘরে বসেই 20 দিনেরও কম সময়ের চেষ্টায় এই যন্ত্র তৈরি করলেন নদিয়ার হাঁসখালি থানার বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক শুভময় বিশ্বাস ।
অটোমেটিক স্যানিটাইজ়ার যন্ত্রের সঙ্গে শুভময়বাবু এই যন্ত্রের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে ওই মেশিনে হাত না দিয়েই নিজের গোটা শরীরটা স্যানিটাইজ় করা সম্ভব হবে বলে দাবি করছেন শুভময়বাবু । তিনি বলেন, "বাজারে এখন যেভাবে স্যানিটাইজ়ারের অভাব দেখা দিচ্ছে তাতে মধ্যবিত্তদের পক্ষে স্যানিটাইজ়ার কিনে সবসময় ঘরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না । শুধু তাই নয়, স্যানিটাইজ়ার থাকলেও তা দিয়ে শুধুমাত্র হাত স্যানিটাইজ় হচ্ছে । কিন্তু নাক-মুখ-চোখ স্যানিটাইজ় হচ্ছে না । পাশাপাশি ছোটদের পক্ষেও এই স্যানিটাইজ়ার অতি বিপদজনক । ছোটরা খেলা করতে করতে স্যানিটাইজার খেয়ে নিতে পারে । সে ক্ষেত্রে জীবনহানিও হতে পারে । মূলত এই কথা মাথায় রেখেই এই যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে ।"
কীভাবে কাজ করে এই যন্ত্র ? শুভময়বাবু এই যন্ত্রের নাম দিয়েছেন অটোমেটিক অর্গানিকনন টক্সিক স্যানিটাইজার । তাঁর দাবি, এই মেশিনের সামনে এসেদাঁড়ালে আপনার সারা শরীর নিজে থেকেই স্যানিটাইজ় হয়ে যাবে । চিকিৎসকদের একাংশবলছেন, 100 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে কোরোনার জীবাণু নষ্ট হয়ে যায় । কিন্তুশুভময়বাবুর দাবি, তাঁর এই মেশিনের 537 ডিগ্রি সেলসিয়াসতাপমাত্রা থাকবে । যেখানে কোরোনা সংক্রমণ খুব সহজেই দমন করা সম্ভব হবে । এইমেশিনটির ওজনও খুব কম । ফলে সব জায়গায় নিয়ে ঘোরা যাবে । পাশাপাশি দামও খুবসামান্য । শুভময় বিশ্বাস বলছেন, "সরকার পাশে থাকলে সবারহাতে আগামীদিনে পৌঁছে দেওয়া যাবে এই যন্ত্রটি ।"
পাশাপাশি শুভময় বিশ্বাস আরও একটি যন্ত্র তৈরি করেন । এর নাম দেওয়া হয়েছে নোবেল হাই ভি ডিজ়িন ফ্যাক্টর । এই যন্ত্রটি আপনার ঘরে থাকলে ঘরটি অটোমেটিক স্যানিটাইজ় করে ফেলবে বলেও দাবি শুভময়বাবুর । শুভময়বাবুর কথায়, ধরুন আপনি হাত-পা-চোখ মুখ স্যানিটাইজ় করে এলেন । কিন্তু আপনার জুতো বা মানিব্যাগ কিংবা জামার মাধ্যমে কোরোনা ভাইরাস ঘরে প্রবেশ করতে পারে । সেক্ষেত্রেও এই মেশিনটি ঘরে থাকলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘরে প্রবেশ করতে পারবেন বলে দাবি করছেন তিনি । এই দুটি যন্ত্রের ক্ষেত্রেই পেটেন্টের জন্য পাঠানো হয়েছে । ইতিমধ্যে সেখান থেকে ফিডব্যাকও মিলেছে বলে জানিয়েছেন শুভময় বাবু ।
শুভময়বাবুর যন্ত্রের পেটেন্ট নম্বর