পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Santipur Municipality: আত্মহত্যার চেষ্টা বিফলে, নুন দিয়ে খুদকুঁড়োর ফ্যানই ভরসা প্রয়াত অধ্যাপকের পরিবারের - শান্তিপুর পৌরসভার খবর

অধ্যাপক দাদা প্রয়াত হয়েছেন আগেই ৷ তাঁর পরিবার বলতে রয়েছেন তিন অবিবাহিত ভাইবোন ৷ তাঁদের অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন তিনজন ৷ কিন্তু কথায় আছে না, ভাগ্যে না-থাকলে মরণও হয় না ৷ এখন তাঁদের খাবার বলতে একবেলা খুদকুঁড়োর ঘন ফ্যান ৷ আর একবেলা অনাহার ৷ শান্তিপুর পৌরসভার 17 নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি এই পরিবারের(Santipur Municipality)৷

Santipur Municipality
শান্তিপুরে অনাহারে প্রয়াত অধ্যাপকের পরিবার

By

Published : Jul 22, 2022, 10:20 PM IST

শান্তিপুর, 22 জুলাই: অনাহারে প্রয়াত অধ্যাপকের পরিবার ৷ বেঁচে থাকার তাগিদে এখন খুদকুঁড়োর ফ্যানই সম্বল(family of late professor is going through extreme starvation in santipur)৷ জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা আসায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ৷

নদিয়ার শান্তিপুরের 17 নম্বর ওয়ার্ডের ডাবরে পাড়া এলাকায় বাস করেন শান্তিপুর কলেজের প্রয়াত অধ্যাপক পরমানন্দ মুখোপাধ্যায়ের পরিবার ৷ বর্তমান রয়েছেন অধ্যাপকের তিন অবিবাহিত ভাইবোন । উচ্চমাধ্যমিক পাস দিদি নমিতা মুখোপাধ্যায়ের বয়স 72 বছর ৷ এক ভাই দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের বয়স 70, তিনি বিজ্ঞানে স্নাতক । 65 বছরের ছোট ভাই বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বি কম পাস ।

ছোট ভাই বিশ্বজিতের কথায়, ব্যাক ডোর দিয়ে চাকরি হওয়ার কারণে যোগ্যতার প্রমাণ দেখানোর সুযোগ মেলেনি । বড় ভাই দেবাশিস মুখোপাধ্যায় একসময় ডাক্তারের কাছে কাজ করে সামান্য যা রোজগার করতেন তাতে ভাইবোনদের দু'বেলা দু'মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারতেন ৷ কিন্তু বর্তমানে বয়সজনিত এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ছোট ভাই ছাড়া কাজ করতে পারেন না কেউই ।

আরও পড়ুন :চুরি করতে এসে পোষ্যকে বিষ খাইয়ে মারল দুষ্কৃতী ! শোকস্তব্ধ দম্পতি

দিদির বার্ধক্য ভাতার দু'হাজার টাকা গ্যাস এবং ইলেকট্রিকের বিল দিতেই লেগে যায় ৷ তাই 10 থেকে 12 টাকা কেজি দরে খুদের চাল গুঁড়ো করে তার ঘন ফ্যান নুন দিয়ে খান একবেলা । দিনের পর দিন আধ পেটা খেয়ে থাকলেও, খোঁজ নেন না কেউই । তবে প্রতিবেশী প্রতাপচন্দ্র প্রামাণিক সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেন বলেই স্বীকারোক্তি ওই পরিবারের ।

দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সম্প্রতি তিন ভাইবোন একসঙ্গে ইঁদুর মারার বিষ খেলেও, মৃত্যু হয়নি কারোরই । বর্তমানে তারা কোনও এক সহৃদয় ব্যক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছেন, শেষ সম্বল বাড়িটুকু নিয়ে তাঁদের বাকি জীবনটুকু তিনটি পেট একবেলা কোনওমতে দুটো খেতে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন সেই আশায় ।লকডাউনের মধ্যে দুটি এনজিও দু'প্যাকেট বিস্কুট দিয়ে চারটি ছবি তুলে পাবলিসিটি বাড়িয়ে আর আসেনি কখনও ।

শান্তিপুরে অনাহারে প্রয়াত অধ্যাপকের পরিবার
আরও পড়ুন :শিশুর দেহে প্রাণ ফেরাতে ঘর বন্ধ করে চললো প্রার্থনা ! শরীর খুবলে খেল পিঁপড়ে

দিদি নমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, "শুনেছিলাম করোনা থেকে বাঁচতে তিনবার বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তবে আমাদের তিনজনের জন্য ভাবেনি কোনও সরকারই । স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকলেও কিছুটা দুশ্চিন্তা মুক্ত হতাম চিকিৎসার ক্ষেত্রে, তাও জুটলো না কপালে ।"

এই প্রসঙ্গে প্রতিবেশী মিতা প্রামাণিক বলেন, "একসময় সম্ভ্রান্ত এবং শিক্ষিত পরিবারের এই দুর্দশা দেখে খুব কষ্ট লাগে ৷ নিজেদের সামান্য রোজগার থেকে কিছুটা সহযোগিতার চেষ্টা করি ।" স্থানীয় কাউন্সিলর দীপঙ্কর সাহার কথায়, অতীতে দুটো বার্ধক্য ভাতা করে দেওয়া হয়েছে ৷ অপর একজনের কাগজপত্র জমা রাখা রয়েছে, শীঘ্রই তা চালু হবে । স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যেখানে হচ্ছিল সেখানে না-যাওয়ার কারণে কার্ড হয়নি ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোর মতো পরিকাঠামো নেই তাই করা যায়নি ৷

আরও পড়ুন :ঘর বদলালেন মীর, নতুন ঠিকানায় নতুন জীবন শুরু সকাল ম্যানের

ABOUT THE AUTHOR

...view details