পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

নীলবর্ণা দুর্গা পূজিত হন কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে

দেবী দুর্গার রং নীল ৷ নদিয়ার কৃষ্ণনগর বেগোপারার চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে এভাবেই পূজিত হন দেবী দুর্গা ৷

By

Published : Sep 29, 2019, 5:26 AM IST

Updated : Oct 1, 2019, 6:05 AM IST

দেবী দুর্গা

কৃষ্ণনগর : শুরুটা হয়েছিল ক্ষণিকের ভুল দিয়ে ৷ আর তখন থেকেই কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে নীলবর্ণা রূপেই পূজিত হন দেবী দুর্গা ৷ আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এই পুজোর ৷ দেবী দুর্গার ডান দিকের পরিবর্তে বাম দিকে থাকেন লক্ষ্মী ও গণেশ ৷ একইভাবে বাম দিকের পরিবর্তে ডান দিকে থাকেন সরস্বতী ও কার্তিক ৷

কীভাবে শুরু হল এই পুজো ? সেই কাহিনি জানতে পিছিয়ে যেতে হবে 300-350 বছর ৷ অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বামরাইল গ্রামে বসবাস ছিল চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ৷ প্রতি বছরই ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হত ৷ এরকমই এক বছরে পুজো শুরুর আগের রাতেও শেষ হয়নি প্রতিমা তৈরির কাজ ৷ তাই রাত জেগে প্রতিমাতে রং করছিলেন এক মৃৎশিল্পী ৷ হ্যারিকেনের আলোয় কাজ করছিলেন তিনি ৷ ঘুমও পেয়েছিল বেশ ৷ কিন্তু, পরদিনই যে পুজো ৷ যেভাবে হোক প্রতিমায় রং করতেই হবে ৷ সেই অবস্থাতেই রাতভর জেগে কাজ করেন ওই মৃৎশিল্পী ৷ কিন্তু, আবছা আলো ফুটতেই টের পান কী হয়েছে ৷ হলুদের পরিবর্তে নীল রং করেছেন প্রতিমায় ৷ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই মাথায় হাত পড়ে পরিবারের সদস্যদের ৷ আর কয়েক ঘণ্টা পরেই যে পুজো ৷ এবার কী হবে !

সেই উত্তর খোঁজার মাঝেই বাড়ির এক বৃ্দ্ধ জানান, সে রাতেই তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছেন দেবী দুর্গা ৷ নীলবর্ণা রূপেই পুজোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷ একই স্বপ্নাদেশ পান পুরোহিত ও ঠাকুর তৈরির পাল ৷ তারপর এভাবেই প্রতি বছর আরাধনা করা হয় দেবী দুর্গার ৷ পরে 1947 সালে দেশভাগের এপার বাংলায় চলে আসে চট্টোপাধ্যায় পরিবার ৷ কৃষ্ণনগরের বেগোপারাতে বসবাস শুরু করে তারা ৷ পশ্চিমবঙ্গে এসেও রীতিতে কোনও বদল হয়নি ৷ পরম্পরা মেনে আজও চলে আসছে সেই রীতিই ৷ পরিবারের সদস্য তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, সাধারণত দেবী দুর্গার ডান দিকে থাকেন লক্ষ্মী ও গণেশ ৷ তাঁদের পরিবারের পুজোয় লক্ষ্মী ও গণেশ অধিষ্ঠিত হন দেবী দুর্গার বাম দিকে ৷ আর ডানদিকে অধিষ্ঠিত হন সরস্বতী ও কার্তিক ৷

দেখুন ভিডিয়ো

আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এই পুজোর ৷ প্রথামতো নবমীতে চালের গুঁড়ি দিয়ে মানুষের একটি অবয়ব তৈরি করা হয় ৷ শত্রু দমনের জন্য সেটির বলি দেওয়া হয় ৷ এভাবেই প্রথা মেনে প্রতি বছর দেবী দুর্গা পূজিত হন চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে ৷ তবে একটি ক্ষেত্রে পরিবর্তিত রয়েছে রীতি ৷ আগে পুজোয় মহিষ বলি দেওয়া হত, এখন পাঁঠা বলি হয় । ভোগের মধ্যেও রয়েছে বিশেষত্ব ৷ ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন দেবী দুর্গাকে মাছ দেওয়া হয় । সেখানে ইলিশ থেকে শুরু করে রুই, কই থাকে । মাছের পাশাপাশি দশমীতে থাকে পান্তা ভাত, কচুর শাক এবং ডালের বড়া ৷ অষ্টমীতে কুমারী পুজোর চলও রয়েছে ৷

Last Updated : Oct 1, 2019, 6:05 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details