মালদা, 10 ফেব্রুয়ারি : উত্তরাখণ্ডের চামোলির তুষারধসের জলের স্রোত আছড়ে পড়েছে মালদা জেলাতেও। সেই বিপর্যয়ের পর থেকে আর খোঁজ নেই ইংরেজবাজারের ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুর গ্রামের শ্রমিক আনিস শেখের। আনেশ বেঁচে আছেন, নাকি মৃত, তাও বুঝতে পারছে না পরিবারের লোকজন। দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে কেঁদে ভাসাচ্ছেন আনিসের স্ত্রী রেহানা বিবি।
37 বছরে আনিস শেখ 13 মাস আগে উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে ঋষিগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করছিলেন তিনি। গত রবিবার সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ তুষারধসের জল ওই প্রকল্পের উপর দিয়ে বয়ে যায়। তারপর থেকেই খোঁজ মিলছে না আনিসের। তাঁর দুই ভাই উত্তরাখণ্ডেরই অন্যত্র কাজ করছিলেন। এই মুহূর্তে ওই দুই ভাই সিকিম শেখ ও একরামুল শেখ ঘটনাস্থলে রয়েছেন। কিন্তু এখনও তাঁরা দাদার খোঁজ পাননি।
উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ে নিখোঁজ ইংরেজবাজারের আনিস
উত্তরাখণ্ডে কাজ করতে গিয়ে চামোলি তুষারধসে নিখোঁজ মালদার ইংরেজবাজারের বাসিন্দা অনিস শেখ ৷ তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ তাঁর চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের লোকজন ৷
ভগবানপুরে আনিসের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী রেহানা বিবি ও তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে। মেয়ে নাসরিমা খাতুন স্থানীয় নঘরিয়া হাইস্কুল থেকে আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। একই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে ছেলে নাসিব শেখ। আনিসের স্ত্রী রেহানা জানাচ্ছেন, "রবিবার সকাল ন'টা নাগাদ আমাদের মধ্যে শেষ কথা হয়েছিল। সেদিন আমার নানি মারা গিয়েছিল। ও জানিয়েছিল, নানিকে মাটি দেওয়ার সময় ভিডিও কলিংয়ে সেটা দেখবে। সেই কথা মতো নানিকে মাটি দেওয়ার সময় আমি ওকে ভিডিও কল করি। কিন্তু তখন থেকে ওর ফোনে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বারবার ফোন সুইচ অফ বলছে। সেদিন বেলা 12টায় ওকে ফোন করেছি। তখনও দুর্ঘটনার খবর জানি না। বেলা দুটো নাগাদ ওখান থেকে দেওর আমাকে ফোন করে। প্লান্টের সাহেব ওকে সব জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে ও আমাকে কিছু জানায়নি। এখন শুনছি, ওখানে আমার স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওর যদি কিছু হয়ে যায় তবে ছেলেমেয়েকে কীভাবে মানুষ করব?"
আরও পড়ুন :উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ভেঙে ব্যাপক তুষারধস! ভাঙল বাঁধ, 150 জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
আনিসের বাবা মাজেমুল শেখ জানান, "আমার দুই ছেলে এখনও সেখানে বড় ছেলেকে খুঁজছে। কিন্তু তার কোনও খোঁজ মিলছে না। এখনও এখানকার প্রশাসন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা উত্তরাখণ্ড প্রশাসনকে সব জানিয়েছি। মালদা জেলা প্রশাসনকেও জানাব। আমরা ছেলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ও কোথায় আছে, কীভাবে আছে, কিছুই জানি না।"