বিধায়ক ছেলের গ্রেফতারিতে কী বলছেন মা বড়ঞা, 18 এপ্রিল:জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হতেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা ৷ তবে সম্পূর্ণ উলটো সুর শোনা গেল বিধায়কের মায়ের গলায় ৷ ছেলে কারওকে কষ্ট দিতে পারে, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না বেলারানি সাহা ৷ মায়ের মন বলছে, ছেলে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে, তাই সে কারও কষ্টের কারণ হতে পারে না ৷
তখন জীবনকৃষ্ণ সাহার বয়স মাত্র 7 বছর ৷ সেই সময়েই মায়ের আঁচল সরে গিয়েছিল তাঁর মাথার উপর থেকে ৷ পারিবারিক অশান্তির কারণে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয় তাঁর মা বেলারানি সাহাকে ৷ ছেলের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে বের করে দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ সাহা ৷ সেই সময় জীবনকৃষ্ণের বয়স 7 বছর ৷ আর তাঁর দুই বোন তখন যথাক্রমে 4 বছর ও 3 মাসের ৷
বারবার ছেলেমেয়েদের আনতে সাঁইথিয়ার বাড়িতে গেলেও বিশ্বনাথ খালি হাতেই তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ ৷ এরপর বিশ্বনাথ অপর একজনকে বিয়ে করেন ৷ তবে সৎ মায়ের সঙ্গে কোনও বনিবনা হয়নি জীবনকৃষ্ণর ৷ মায়ের কাছে যেতে না দেওয়ায় বাধ্য হয়েই তিনি বড় হয়ে ওঠেন বাবার কাছে ৷
তবে বড় হওয়ার পর আর বাবার কথা মানেননি তৃণমূল বিধায়ক ৷ তাঁর যখন 23 বছর বয়স, তখন থেকেই তিনি মায়ের সঙ্গে থাকা শুরু করেন ৷ সাঁইথিয়ার বাড়ি ছেড়ে আসার পর আন্দির বাড়িতে থাকতেন তিনি ৷ সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ বেলারানি সাহা জানালেন, তাঁর ছেলে পড়াশোনায় ভালো ছিল ৷ নিজের দক্ষতায় প্রথমে তিনি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পান । তারপর হাইস্কুলে । প্রতি মাসে টাকা পাঠিয়ে দিতেন কারও না কারও হাতে ৷ মাঝে মধ্যে তিনি নিজে আসতেন দেখা করতে ।
খড়গ্রামের এক চিলতে মাটির দাওয়ায় বসে কাঁদতে কাঁদতে জীবনকৃষ্ণের মা বলেন, "ছোট থেকে খুব কষ্ট পেয়েছে আমার ছেলে ৷ তাই ও কষ্টের মান বোঝে ।" একটাই কথা বারবার বলে গেলেন জীবনকৃষ্ণের মা ৷ তাঁর ছেলে কখনওই কোনও খারাপ কাজ করতে পারেন না বলে তাঁর বিশ্বাস । ছেলে দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন, সে কথাও ভাবতে চাইছেন না তিনি । তিনি বলেন, ছেলেকে তাঁর স্বামীর জন্য ছোট থেকে বড় হতে দেখতে পাননি । তবুও তিনি জানেন, তাঁর ছেলে কারও খারাপের কারণ হতে পারে না ।
আরও পড়ুন:"বাবার দ্বিতীয় বিয়ে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল জীবনকে !" দাবি প্রবীণ প্রতিবেশীর