পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

জিয়াগঞ্জে খুন হওয়া শিক্ষকের RSS যোগের প্রমাণ নেই, দাবি তদন্তকারীদের - বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল,পুত্র অঙ্গন

তদন্তকারীদের তরফে নবান্ন যে রিপোর্ট এসেছে তা বলছে, জিয়াগঞ্জে সপরিবারে শিক্ষক খুনের ঘটনায় RSS যোগের প্রমাণ নেই ৷ তদন্তে উঠে এসেছে শিক্ষকতার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নানা ব্যবসাতেও জড়িত ছিলেন বন্ধুপ্রকাশ । স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশের সম্পর্কের টানাপোড়েনেরও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ । বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।

ছবি

By

Published : Oct 12, 2019, 1:12 AM IST

কলকাতা, 12 অক্টোবর : জিয়াগঞ্জে সপরিবারে শিক্ষক খুনের ঘটনায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি । আলোচনা চলছে জাতীয় স্তরেও । রাজ্য BJP নেতাদের দাবি, এই খুন রাজনৈতিক । RSS সদস্য হওয়াতেই স্ত্রী, শিশুপুত্র-সহ খুন করা হয়েছে বন্ধুপ্রকাশ পালকে । কিন্তু তদন্তকারীদের তরফে নবান্ন যে রিপোর্ট এসেছে তা বলছে, বন্ধুপ্রকাশের সঙ্গে RSS যোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি । তার পরিবারের সদস্যরাও এই বিষয়টি অস্বীকার করেছেন । শিক্ষকের আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবরা পুলিশকে জানিয়েছেন RSS কেন, কোনও রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না বন্ধুপ্রকাশের । তদন্তে উঠে এসেছে শিক্ষকতার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নানা ব্যবসাতেও জড়িত ছিলেন তিনি । স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনেরও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ । তদন্তে এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।

বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে জিয়াগঞ্জে নিজের বাড়িতেই খুন হন বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল (30) ও পুত্র অঙ্গন (5) । ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের খুন করে আততায়ীরা । এরপরই বন্ধুপ্রকাশকে RSS কর্মী বলে দাবি করে জেলা এবং রাজ্য BJP নেতারা । তাদের দাবি এই খুন সম্পূর্ণ রাজনৈতিক । RSS করার জন্যই প্রাণ গেল ওই শিক্ষকের ।

তদন্ত রিপোর্ট

এই সংক্রান্ত আরও পড়ুন : জিয়াগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশুপুত্র সহ ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন

ঘটনা নিয়ে টুইট করেন অপর্ণা সেন । প্রকৃত তদন্তের দাবিও করেন তিনি । অন্যদিকে BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় CBI তদন্তের দাবি করেছেন । এরই মাঝে নবান্নে রিপোর্ট পাঠাল তদন্তকারীরা । রিপোর্ট বলছে, এই ঘটনা নিয়ে বন্ধু প্রকাশের আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । সেই জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে চেয়েছিল RSS যোগের বিষয়টি । পুলিশের দাবি, সবাই এই বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন । এমনকী এই খুনের সূত্রের খোঁজে গোটা বাড়িতে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ । সেই তল্লাশিতে কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি, যা প্রমাণ করবে বন্ধুপ্রকাশের RSS বা কোনও রাজনৈতিক যোগ ছিল । খুন হওয়া শিক্ষকের পরিবারের লোকজন এই বিষয়টির সমালোচনা করেছেন বলে নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ ।

এই সংক্রান্ত আরও পড়ুন : জিয়াগঞ্জে খুন: RSS-এর শিক্ষক সংগঠনের ধিক্কার মিছিল

বন্ধুপ্রকাশের মা মায়া পাল থাকেন সাগরদিঘিতে ৷ বড় মেয়ের বাড়িতে । ইতিমধ্যে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ । তদন্তকারীদের দাবি, ছেলের RSS যোগের কথা অস্বীকার করেছেন মায়া । খুনের ঘটনা নিয়ে বন্ধুপ্রকাশের যে তুতোভাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন , তিনিও অনুরোধ করেছেন এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক রং না দিতে । বিউটির দাদা সাক্ষীগোপাল ঘোষ থাকেন রামপুরহাটে । তিনিও একই অনুরোধ করেছেন বলে দাবি পুলিশের । বন্ধুপ্রকাশ ঘনিষ্ঠ দীপ্তিমান সরকারের কাছে এক অপরিচিত ব্যক্তি নিজেকে RSS কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোন করেছিলেন । কলকাতা থেকে যাওয়া সেই ফোনে পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে চাওয়া হয় । কিন্তু বন্ধুপ্রকাশের পরিবার তা নিতে অস্বীকার করেছে ।

এই সংক্রান্ত আরও পড়ুন : জিয়াগঞ্জে খুনের ঘটনায় দ্রুত কড়া পদক্ষেপ চান মর্মাহত রাজ্যপাল

খুনের পর আততায়ীদের দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেছে বেশ কয়েকজন । সাক্ষী হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । তদন্তে উঠে এসেছে শিক্ষকতার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কারবার করতেন বন্ধুপ্রকাশ । একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কম্পানির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৷ একইসঙ্গে SBI লাইফ, PNB মেট লাইফের এজেন্টও ছিলেন তিনি । রেডিসন চিপের ডিস্ট্রিবিউটর ছিলেন তিনি । এইসব কারবারের জন্য তার কিছু ধার দেনা ছিল । এর জেরে দিনকয়েক মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন বন্ধুপ্রকাশ । পাশাপাশি পুলিশ ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে বিউটির লেখা একটি চিঠি । যেখানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিষয়টি স্পষ্ট । তদন্তে সবকিছুই মাথায় রাখছে পুলিশ । ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু'জনকে আটক করা হয়েছে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details