নওদা, 29 জুলাই : লাভের আশায় লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার পান চাষিরা । কিন্তু ভারী বৃষ্টি সেই আশায় জল ঢেলেছে ৷ বরজে জল জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পানের গোড়া । হলুদ হয়ে যাচ্ছে পান পাতা । মরে যাচ্ছে পানগাছ । যার ফলে পাইকারি বাজারে ওই পানের দাম এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে লাভের অঙ্ক তো দূরের কথা চাষের জন্য যে টাকা খরচ হয়েছে তা ঘরে তুলতে পারবেন কি না তা নিয়ে মাতায় হাত পানচাষিদের ৷
এবছর ভারী বৃষ্টির জেরে প্রায় 100 বরজ পানের জমিতে জল জমেছে ৷ যার ফলে পচন ধরেছে পানগাছের গোড়ায় ৷ হলুদ হচ্ছে পানপাতা ৷ মুর্শিদাবাদ জেলার নওদার ত্রিমোহিনী এলাকা পান চাষের জন্য বিখ্যাত । হাজার হাজার একর জমিতে প্রতি বছর পান চাষ করেন সেখানকার চাষিরা । এই পান চাষ করেই সংসার চলে অনেকের ৷ যে সব চাষির নিজের জমি রয়েছে তাঁরা সেই জমিতেই পান চাষ করেন ৷ জমি নেই এমন অনেক চাষি প্রতিবছর বাৎসরিক জমি লিজ় নিয়ে পান চাষ করেন ৷ সেক্ষেত্রে প্রতি বিঘা লিজ়ে বছরে 15 থেকে 20 হাজার টাকা দিতে হয় ওই চাষিদের ৷ তারপর রয়েছে চাষের খরচ ৷ প্রতি 10 কাঠা জমিতে পানের বরজ করতে খরচ পড়ে 50 থেকে 60 হাজার টাকা ৷ তবে ত্রিমোহিনী এলাকার বেশির ভাগ চাষিই জমি লিজ় নিয়ে চাষ করে থাকেন ৷ তার উপর রয়েছে শ্রমিকের মজুরি ৷
একজন শ্রমিক একদিনে 100 পন(1 পন সমান 80 পিস) পান তুলতে পারেন । শীতকালে ফলন বাড়ায় প্রতিদিন বরজ থেকে পানের পাতা তোলা যায় । শীতকালে পানের গুণগত মান অনেক বাড়ে। ফলে সেই সময় পান চড়া দামে বিক্রি হয় । গত বছর শীতকালে নওদার ত্রিমোহিনী পান বাজারে পন প্রতি পানের দাম উঠেছিল 110 টাকা । এই বাজার থেকেই ভিন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশেও পান রপ্তানি হয় । কিন্তু শীত আসতে এখন অনেকটা দেরি ৷ ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ নতুন বরজ নষ্ট হয়েছে । এই সময় প্রতিবছর ত্রিমোহিনী পাইকারি বাজার থেকে প্রতিদিন অন্তত কমপক্ষে চার লরি পান রপ্তানি হত । এবার সেই রপ্তানি নেমে এসেছে এক লরিতে । দামের কথা তো ছেড়েই দেওয়ার মতো ৷ গত বছর এই সময়ে চাষিরা পানের দাম পেয়েছিলেন পন প্রতি 50 থেকে 60 টাকা । এবছর সেই দাম নেমে এসেছে 15 থেকে 20 টাকায় । সেই সঙ্গে বরজ নষ্ট হওয়ার কারণে উৎপাদন কম ৷ পাইকারি বাজারে আমদানিও তলানিতে এসে ঠেকেছে ।