বহরমপুর, 13 জুন : বাংলা, বিহার ও ওড়িশার দেওয়ান নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের নামানুসারে নামাঙ্কিত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ ৷ যা আগে মুকশুদাবাদ নামে পরিচিত ছিল ৷ নবাবি আমলে বাংলার প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল মুর্শিদাবাদ ৷ এক সময় এই শহরে শোনা যেত ঘোড়ার খুড়ের শব্দ ৷ একটি রাজ বন্দর হিসেবেও ব্যবহৃত হত মুর্শিদাবাদ ৷ মুর্শিদাবাদের দক্ষিণে 40 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পলাশীর ইতিহাসও সকলের জানা ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস বন্দী হয়েছে মুর্শিদাবাদ ৷ হাজারদুয়ারি প্রাসাদ, ইমামবারা, কাটরা মসজিদের মতো বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র ৷ পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফে ঐতিহাসিক জায়গাগুলিকে সংরক্ষণ করে তৈরি করা হয়েছে পর্যটন স্থান ৷ এই পর্যটন স্থানগুলিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যবসা ৷ বহু মানুষের সংসার চলে এই স্থানগুলিতে ব্যবসা করে ৷ রোজ 300-400 টাকা রোজগার করে সংসার চালান তাঁরা ৷
সব কিছু চলছিল ঠিকই ৷ পর্যটকদের আনাগোনায় ব্যবসাতেও লাভের মুখ দেখছিলেন ব্যবসায়ীরা ৷ কিন্তু, প্রথম ধাক্কাটা আসে 2019-র ডিসেম্বর মাসে ৷ তখন গোটা দেশে আগুন জ্বলছে ৷ কারা দেশের নাগরিক থাকবেন, কাদের দেশছাড়া হতে হবে, তাই নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক ৷ বিভিন্ন জায়গায় চলে বিক্ষোভ, আন্দোলন ৷ টায়ার জ্বালিয়ে চলে পথ অবরোধ ৷ তার আঁচ পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও ৷ বিভিন্ন জেলায় চলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন ৷ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷ আগুন ধরানো হয় ফাঁকা লালগোলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনেও ৷ তারপরই পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ তারপর থেকে আর পর্যটকের দেখা মেলেনি নবাবের শহরে ৷