মুর্শিদাবাদ, 20 নভেম্বর: ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাটদের সর্বাঙ্গীন পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন অবিভক্ত বাংলায় রেশম শিল্প (Silk Industry) উন্নত হয় । অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা ও ভারতের মালদা ও মুর্শিদাবাদ বেঙ্গল সিল্কের প্রধান উৎপাদনস্থল হিসেবে গণ্য হয় । তবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের আক্ষেপ পাহাড়প্রমাণ (Due to Remuneration Silk Artists are Trouble) ।
রাজশাহী ও মালদা, সিল্ক ইতিহাসের সেই নজিরই বহন করে এখনও । একসময় মুর্শিদাবাদ খ্যাতি লাভ করেছিল পূর্ব ভারতের 'সিল্ক মক্কা' হিসেবে । মুর্শিদাবাদ সিল্কের কদর ছিল দেশ-বিদেশে । এখনও ভিন্ন দেশীয় মানুষের মধ্যে সিল্কের সেই চাহিদা রয়েছে । কিন্তু উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে সেভাবে মেলে না উঁচু দরের মুর্শিদাবাদ সিল্ক ।
রেশমশিল্প একপ্রকার হস্তশিল্প । রেশম শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে । তবে মুর্শিদাবাদ সিল্কের গুণমান ও মর্যাদা রয়েছে যথেষ্টই । তবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের আক্ষেপ অনেক । প্রশাসনিক উদাসিনতার কারণ তো আছেই । পাশাপাশি পরিশ্রমের মূল্য একেবারেই নগণ্য । ফলে শিল্পীদের সংসার চালানোই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে ৷
রেশম শিল্পের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অনিশ্চিয়তায় ধুঁকছেন শিল্পীরা আরও পড়ুন:রাজ্য থেকে সেরা রেশম সুতো উৎপাদক কালিয়াচকের আনসারুল শেখ
এক কারিগরের বক্তব্য, একটি সিল্ক শাড়ি তৈরি করতে লাগে 2 দিন । প্রয়োজন হয় 2 জন কারিগরের । যার মূল্য পান তারা 350 টাকা মাত্র । বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে মুর্শিদাবাদে রেশম শিল্পীদের এমন দৈন্যদশা । কারিগরদের জন্যও যেমন কিছু ভাবা হয়নি, তেমনই বাজার ধরে রাখতেও চোখে পড়েনি সরকারি উদ্যোগ । যে সিল্কের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে সেই রেশম কারিগরদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় । অনিশ্চিত এই পেশা থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন বহু শিল্পী । তবে দীর্ঘদিন ধরে এমন পেশাকে ভালোবেসে অন্য পেশায় যেতে পারেননি অনেকেই । তবে তাদের আগামী প্রজন্ম আদৌ কতদিন এই পেশাকে ধরে রাখতে পারবে তা জানা নেই তাঁদেরও । এমন সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী মুর্শিদাবাদের সিল্ক বা রেশম শিল্প নিজের অস্তিত্ব সংকটে সংকটে ।