বহরমপুর, 20 অক্টোবর : করোনা আতঙ্কে দীর্ঘদিন অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের মতো মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক স্থান হাজারদুয়ারির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল দেশ-বিদেশের পর্যটকরা । ধীরে ধীরে ফের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় পুজোর মরসুমে নবাম নাজিম হুমায়ুন জাঁ-র তৈরি এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য আবারও পর্যটক টানতে শুরু করেছে ৷
ফের পর্যটকদের আগমন হতে শুরু করায় খুশি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে টুরিস্ট গাইড ও টাঙা চালকরা । তবে সমস্যা একটাই । এখন হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামে ঢুকতে হলে টিকিট কাটতে হচ্ছে অনলাইনে । যার ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বহু পর্যটক ৷ অনেক সময় অনলাইন টিকিট ঠিকমতো বুকিং না হওয়ায় হাজারদুয়ারি দেখতে এসে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই ৷ আর এই সুযোগে বহু অসাধু ব্যবসায়ী টিকিটের কালোবাজারি শুরু করেছে । যার জেরে অনেক পর্যটক মিউজিয়ামে ঢুকতেই পারছেন না । তবে এই বিষয়টি এড়িয়ে হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের ডেপুটি সুপারের দাবি, পর্যটকদের জন্য সাজানো রয়েছে মিউজিয়াম । ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসে ভিড় আরও বাড়বে ।
এক সময় বাংলা, বিহার ও ওড়িশার রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ । আজও নবাবের শহর নামেই বেশি পরিচিত মুর্শিদাবাদের লালবাগ । লালবাগের ভাগীরথীর তীরে 1829 সালের 9 অগাস্ট হাজারদুয়ারির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন নবাব নাজিম হুমায়ুন জাঁ । প্রধান অতিথি হিসাবে সেদিন উপস্থিত ছিলেন উইলিয়াম ক্যাভেন্ডিস বেন্টিঙ্কস । নকল ও আসল দরজা মিলিয়ে এক হাজার দরজার এই হাজারদুয়ারির নির্মাণ কাজ শেষ হয় 1837 সালের ডিসেম্বরে ।
আরও পড়ুন : Durga Puja: ভাল না লাগলেও আসতে হয়, কাঁসর হাতে শৈশব হারাচ্ছে সুমনরা
425 ফুট লম্বা ও 200 ফুট চওড়া ডেরিক স্থাপত্যের হাজারদুয়ারি বা বড়কুঠি নির্মাণে খরচ পড়েছিল তখনকার দিনে প্রায় সাড়ে 16 লাখ টাকা । প্রায় দুই শতাব্দী মাথা উঁচু করে নবাব আমলের ইতিহাসকে বহন করে আসছে হাজারদুয়ারি । পরবর্তীতে ভারত সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই প্যালেস অধিগ্রহণ করে পর্যটকদের জন্য খুলে দেয় ।
তিন তলা বিশিষ্ট মিউজিয়ামের প্রথম তলায় রয়েছে নবাব আমলের হাজার হাজার নিদর্শন । বিভিন্ন রকম অস্ত্র থেকে শুরু করে যুদ্ধের পোশাক ও লোহার দস্তানার পাশাপাশি রয়েছে ম্যাজিক আয়না । দরবার হল ও শয়ন কক্ষে রয়েছে নবাবদের ব্যবহৃত সব আসবাব । প্যালেসের দেওয়াল জুড়ে চিত্রিত রয়েছে অসাধারণ চিত্রকলা ।