মানুষের খুলি নিয়ে নাচ ভক্তদের কান্দি, 14 এপ্রিল: কথায় আছে অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট ৷ কিন্তু, মুর্শিদাবাদের কান্দিতে রুদ্রদেবের মন্দিরে অধিক লোকজনের সমাগমেই শুরু হয় গাজন উৎসব ৷ প্রতি বছরের মতো, এ বছরেও গাজন উৎসব উপলক্ষ্যে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছে ৷ কান্দি শহরের 700 বছরের প্রাচীন রুদ্রদেব মন্দিরের গাজন উৎসবে মানুষের খুলি নিয়ে নাচের রীতি রয়েছে ৷ সারা রাত দূরদুরান্ত থেকে আসা ভক্তরা মানুষের খুলি নিয়ে নাচে ৷
মুর্শিদাবাদ জেলার বহু জায়গা থেকে ভক্তরা চৈত্র মাসে লাল শালু পরিধান করেন এবং খালি পায়ে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করেন অন্নের জন্য ৷ গাজনের আগের রাতে তাঁরা ঘরে না-ফিরে, বিভিন্ন মন্দিরে ঘুরে নাচ করেন ৷ তবে কান্দি ও পারিপার্শ্বিক কিছু এলাকার পূণ্যার্থীরা রাতে রুদ্রদেবের মন্দিরে উপস্থিত হন ৷ সেখানে মানুষের খুলি নিয়ে চলে নাচ ও পুজো-পাঠ ৷ চৈত্র মাস শেষের এক দিন আগে হয় এই পুজো ৷ তারপর শুরু হয় চরক ৷
মানুষের খুলি নিয়ে নাচ দেখতে হাজার হাজার মানুষ রুদ্রদেবের মন্দিরে ভিড় করেন প্রতিবছর ৷ মন্দিরের এক সেবায়েত দেবীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, কথিত আছে 700 বছর আগে কামদেব ব্রহ্মচারী নামক এক যোগী রুদ্রদেবের এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ৷ তখন থেকেই নাকি এই প্রথা চলে আসছে ৷ এবারের গাজন মেলা 19 চৈত্র থেকে শুরু হয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার রুদ্রদেবরূপী শিকে পালকি করে শহর পরিক্রমা করানো হয় ৷ বিশ্রামতলা নামে একটি জায়গায় বিশ্রাম করে হোমতলা যাবে রুদ্রদেবের পালকি ৷ সেখানে রাত্রীবাসের পর ফের সকালে পালকিতে শহর পরিক্রমা করে মন্দিরে ফিরবেন রুদ্রদেব ৷ সেখানে সব নিয়মরীতি মেনে শিবের পুজো পাঠ হয় ৷
আরও পড়ুন:উৎসবের গাজনে রঙিন সং, উপার্জনের আশায় সন্ন্যাসী কিশোরও
এক ভক্ত সৌরভ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 11 দিন ধরে এই মেলা চলে ৷ চৈত্র শেষের একদিন আগে রুদ্রদেব পালকি করে শহর পরিক্রমা করে ৷ রাতে হোমতলায় বিশ্রাম করেন তিনি ৷ আর চৈত্র মাসের শেষ দিনে পালকি করে মন্দিরে ফেরেন রুদ্রদেব ৷ এই ধারণাকে সঙ্গী করেই বিগত কয়েকশো বছর ধরে গাজন উৎসবের সময় এই রীতি পালন করা হয় ৷ এর জন্য প্রচুর নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয় ৷