পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Durga puja: তপশিলি পরিবারের হাতে পূজিত হচ্ছেন কাপাসডাঙার দুর্গা

প্রায় আড়াইশো বছর ধরে তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের হাতেই পূজিত হয়ে আসছেন বড়ঞা থানার কাপাসডাঙার দুর্গা। পরিবারের সদস্য গোবিন্দ দাস বাগদি স্বপ্নাদেশ পাওয়া এই প্রতিমা প্রতি 12 বছর অন্তর বিসর্জন করা হয়। একটি প্রতিমা বিসর্জনের 12 বছর পুজোর পর নতুন প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করা হয় একই কাঠামোতে।

Durga puja
তপশিলি পরিবারের হাতে পূজিত হচ্ছেন কাপাসডাঙার দুর্গা

By

Published : Oct 8, 2021, 5:30 PM IST

বড়ঞা, 8 অক্টোবর: মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাচীন দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম দুর্গাপুজো হল কাপাসডাঙার দুর্গা ৷ প্রায় আড়াইশো বছর ধরে তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের হাতেই পূজিত হয়ে আসছেন বড়ঞা থানার কাপাসডাঙার দুর্গা। স্বপ্নাদেশ পাওয়া এই প্রতিমা প্রতি 12 বছর অন্তর বিসর্জন হয়। এক কাঠামোর প্রতিমা 12 বছর পুজোর পর নতুন প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করতে হয়। জমিদারি আমলে জমিদারদের আর্থিক সাহায্যে পুজো হত। শ্রমিক শ্রেণির বাগদি,পরিনার বর্তমানে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ায় গ্রামবাসীরাই সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। এমনকি আড়াইশো বছরের পুরোনো মাটির আটচালা ভেঙে এবারই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্রামবাসীরা। কাপাসডাঙার দুর্গা আসলে শিবদুর্গা নামেই বহুল পরিচিত।

একই মন্দিরে শিব ও দুর্গার নিত্যপুজো হয়। আশ্বিনমাসে দুর্গাপুজো ও চৈত্রমাসে শিবপুজো উপলক্ষ্যে গাজন উৎসব হয়। পুজো সঠিক কতবছরের প্রাচীন তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। কারও মতে আড়াইশো বছরের প্রচীন। কারও মত প্রায় ছশো বছরের। পরিবার ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াইশো বছর আগে গোবিন্দ দাস বাগদি স্বপ্নাদেশ পান শিব-দুর্গা প্রতিষ্ঠার। স্বপ্নাদেশেই নির্দেশ দেওয়া ছিল একবার প্রতিষ্ঠিত প্রতিমায় পুজো হবে একটানা 12 বছর ধরে। বংশানুক্রমে নিত্যপুজো দিতে হবে গোবিন্দ বাগদির পরিবারকেই। এরজন্য বিশেষ মন্ত্রও রয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রামের পশ্চিমদিকে প্রবাহিত নদী দিয়ে ভেসে যাওয়া কাঠ দিয়েই প্রতিমার কাঠামো তৈরি করতে হবে বলেও স্বপ্নে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরদিন ঘুম থেকে উঠে নদীর ধারে গিয়ে নিমগাছের গুড়ি ভেসে আসতে দেখে গোবিন্দ বাগদি। সেই নিমকাঠ তুলে এনে কাঠামো তৈরি করে পুজো শুরু করেন তিনি। নিজেই পুজো শুরু করেন গোবিন্দ বাগদি। সেদিন থেকেই পরিবারের পরিচয় দিয়াসানি (পান্ডা) হিসেবে।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ থেকে তিন ফুটের দুর্গা পাড়ি দিচ্ছে জামশেদপুরে

বংশানুক্রমে তপশিলি সম্প্রদায় গোবিন্দ বাগদির পরিবার পুজো চালিয়ে আসছে। এতদিন মাটির আটচালা ঘরেই পুজো হত। গ্রামবাসী ও এলাকার মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে মন্দির। জমিজমা না থাকায় দিনমজুর খেটেই বর্তমানে সংসার চলে সঞ্জয় বাগদি ও তাঁর তিন ভাইয়ের। পুজোর আর্থিক সামর্থ না থাকায় গ্রামবাসীরাই এগিয়ে এসেছেন। দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে রয়েছে কাপাসডাঙার শিবদুর্গা মাহাত্ম্য। শাস্ত্রমতে কাপাসডাঙার দুর্গা পুজোয় বলিদান প্রথাও রয়েছে। জাগ্রত দেবী বিশ্বাসে বহু মানুষ এখানে পুজো দিয়ে মানসিক করেন। আর 12 বছরে প্রতিমাও মানসিকের। প্রতিমা মানসিকের জন্য লাইনও দিতে হয়। আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য,সংস্কার ও গরিমার আভিজাত্য নিয়েই বাগদি পরিবারের হাতেই পূজিত হয়ে আসছেন কাপাসডাঙার দুর্গা।

ABOUT THE AUTHOR

...view details