মালদা , 18 অক্টোবর : সতেরো বছরের প্রেমিকাকে নিকাহ করতে চেয়েছিল কুড়ি বছরের প্রেমিক ৷ কিন্তু মেয়ের পরিবার সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়নি ৷ তারা অন্যত্র মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে শুরু করেছিল ৷ পাত্র ঠিকও হয়ে গিয়েছিল ৷ এরপরেই দু’জন পালিয়ে যায় বিহারের কিষাণগঞ্জে ৷ সেখানে প্রেমিকের এক আত্মীয়ের বাড়ি ৷ সেখানে তারা নিকাহও করে ৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি ৷ খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে যায় মেয়ের বাড়ির লোকজন ৷ অভিযোগ, শুধু মেয়েকে ফিরিয়ে আনা নয়, সেখানেই বেধড়ক মারধর করা হয় প্রেমিককে ৷ পিস্তল দেখিয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হয় ৷ সেই খবর পৌঁছায় ছেলের বাড়িতে ৷ পরিবারের লোকজন ছেলেকেও বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে ৷ কিন্তু একদিকে সদ্য নিকাহ করা প্রেমিকাকে হারানো, অন্যদিকে জনসমক্ষে এভাবে মারধরের ঘটনায় মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওই যুবক ৷ পরিবারের দাবি , এরপরেই গতকাল সকালে বাড়িতেই কীটনাশক পান করে আত্মঘাতী হয় সে ৷ এই ঘটনায় মেয়ের আব্বা, চাচা সহ তিনজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবারের লোকজন ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ চাঁচল এক নম্বর ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুশমাই গ্রামের ঘটনা ৷
প্রেমিকার বাড়ির লোকজনের মারধর, মালদায় আত্মঘাতী যুবক
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক ধরে পাশের সন্তোষপুর গ্রামের সতেরো বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেম চলছিল মোস্তাফিজুরের ৷ কিন্তু ওই কিশোরীর আব্বা তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি ৷ তিনি মেয়ের জন্য অন্য পাত্র ঠিক করে ফেলেন ৷
মৃত যুবকের নাম মোস্তাফিজুর রহমান ৷ সে এলাকারই একটি ওষুধের দোকানে কাজ করত ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক ধরে পাশের সন্তোষপুর গ্রামের সতেরো বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেম চলছিল মোস্তাফিজুরের ৷ কিন্তু ওই কিশোরীর আব্বা তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি ৷ তিনি মেয়ের জন্য অন্য পাত্র ঠিক করে ফেলেন ৷ এই অবস্থায় পাঁচদিন আগে প্রেমিকাকে নিয়ে কিষাণগঞ্জে চলে যায় মোস্তাফিজুর ৷ সেখানে শরিয়ত মতে তারা নিকাহ করে ৷ কিন্তু সেকথা জানতে পারে প্রেমিকার বাড়ির লোকজন ৷ মোস্তাফিজুরের চাচা মনসুর রহমান বলেন, “ভাতিজা ওর প্রেমিকাকে নিয়ে বিহারের কিষাণগঞ্জে চলে যায় ৷ গত পরশু সেখানে যায় মেয়ের আব্বা, চাচা সহ আরও কয়েকজন ৷ তারা মেয়েকে নিয়ে আসার পাশাপাশি আমার সামনেই ভাতিজাকে বেধড়ক মারধর করে ৷ পিস্তল দেখিয়ে খুনের হুমকি দেয় ৷ এরপর গতকাল আমরা ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসি ৷ কিন্তু মানসিক অবসাদে সকালে সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে ৷ এনিয়ে আমরা তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁচল ও ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি৷”
মোস্তাফিজুরের দাদা রেজ়াউল করিম বলেন, “তিন বছর ধরে ভাইয়ের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল ৷ মেয়ের আব্বাকে আমরা নিকাহের কথা বলেছিলাম ৷ কিন্তু তিনি ভাইয়ের সঙ্গে মেয়ের নিকাহ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন ৷ এরপরেই ভাই ওই মেয়েটিকে নিয়ে কিষাণগঞ্জ পালিয়ে যায় ৷ খবর পেয়ে মেয়ের আব্বা ও তার লোকজন সেখানে গিয়ে ভাইকে বেধড়ক মারধর করে মেয়েকে নিয়ে চলে আসে ৷ সেখানকার মানুষজন আমাদের ফোন করে খবর দেয় ৷ ভাইকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় ৷ কিন্তু গোটা ঘটনায় মানসিক অবসাদে সকালে ভাই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয় ৷”