মালদা, 25 সেপ্টেম্বর : এখনও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি টিঙ্কু ঘোষ, বিশাখা ঘোষ ৷ গতকাল রাতে দু’জনই হঠাৎ স্বামীহারা ৷ আচমকা এই বৈধব্য মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা ৷ দু’জনেরই ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়ে ৷ স্বামীর অবর্তমানে কীভাবে তাদের মানুষ করবেন, ভেবে দিশেহারা ৷ তার উপর টিঙ্কুদেবী যক্ষ্মা রোগী ৷ বছর চারেক ধরে চিকিৎসা চললেও এখনও সুস্থ হতে পারেননি ৷ আর সুস্থ হতে পারবেন কি না, জানেন না কেউ ৷ তবে গোটা গ্রামে এখন একটাই আওয়াজ, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের ফাঁসি দিতে হবে ৷
সামান্য মাছ ধরার জাল নিয়ে বিবাদের জেরে গতকাল রাতে ইংরেজবাজার থানার পার্বত্যা গ্রামে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে দুই যুবককে ৷ নিহত ফুলচাঁদ ঘোষ (32) ও অর্জুন ঘোষ (30) দুধ বিক্রি করে সংসার চালাতেন ৷ এই গ্রামের সিংহভাগ বাসিন্দাই দুধের কারবার করেন ৷ ফুলচাঁদের স্ত্রী বিশাখা ৷ তাঁদের দুই ছেলে, দুই মেয়ে ৷ বিয়ের পর ফুলচাঁদরা তিন ভাই আলাদাই থাকেন ৷ বৃদ্ধ বাবা-মা থাকতেন ফুলচাঁদের কাছে ৷ ছেলের হঠাৎ মৃত্যুতে তাঁদের আশ্রয়ও যেন খানিকটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে ৷ ফুলচাঁদের ভাই সোনা ঘোষ বলেন, “গ্রামের একটি পুকুর দেখাশোনা করে রাজেশ রায় ৷ তার বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে ৷ ওই পুকুর থেকে একটি নেট চুরি যায় ৷ এনিয়ে গতকাল বিকালে পুকুরপাড়েই দাদার সঙ্গে ওর ঝামেলা বাধে ৷ রাতে দাদা বাড়িতে ফেরার পর এখানেও ঝামেলা হচ্ছিল ৷ আমরা ঝামেলা থামাতে যাই ৷ সেই সময় রাজেশরা দাদা আর অর্জুনের পেটে ভোজালি ঢুকিয়ে দেয় ৷ তড়িঘড়ি হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও ওদের বাঁচানো যায়নি ৷ দাদার চার ছেলেমেয়ে ৷ সবাই ছোটো ৷ ও আলাদা থাকত ৷ ওর উপার্জনেই সংসার চলত ৷ এখন ওর পরিবার কীভাবে চলবে জানি না ৷ আমাদেরই দেখতে হবে ৷ তবে যারা ওদের খুন করেছে, তাদের ফাঁসি চাই ৷”