মালদা, 2 ফেব্রুয়ারি : জোট নিয়ে কি কোথাও জট বেঁধেছে ? মালদার বাম মহল থেকে এমনই প্রশ্ন উঠে আসছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকএকাধিক বাম নেতা জানাচ্ছেন, একুশের ভোটে মালদা জেলার 12টি আসনের প্রতিটিতেই প্রার্থী দেবে বলে প্রচার করছে কংগ্রেস । তেমন হলে ওই নেতারা একলা চলো নীতিতে বিশ্বাসী । তাঁরা চাইছেন, মাথা নত করে কোনও জোট নয় । প্রয়োজনে প্রতিটি আসনেই বামেরা আলাদাভাবেই লড়াই করবে । যদিও এমন দাবি তাঁরা কখনই করছেন না বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরির । এক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন বামফ্রন্টের মালদা জেলা আহ্বায়ক অম্বর মিত্র ।
মালদা জেলা কংগ্রেসের গড় হিসাবেই পরিচিত । 2016 এর নির্বাচনে গোটা রাজ্যের সঙ্গে এই জেলাতেও বাম-কংগ্রেসের জোট হয়েছিল । সেবার তিনটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামফ্রন্ট । হবিবপুর, মালতিপুর ও গাজোল । এর মধ্যে হবিবপুর ও গাজোলে বাম প্রার্থীরা জয়ী হন । অন্যদিকে, কংগ্রেস আটটি আসনে প্রার্থী দিয়ে সাতটিতে জয়লাভ করে । মালতিপুর কেন্দ্রে বাম ও কংগ্রেসের 'বন্ধুত্বপূর্ণ' লড়াই হয় । ইংরেজবাজার কেন্দ্রে জয় পান বাম-কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী । শুধুমাত্র বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে বিজেপি জয় পায় । পরবর্তীতে হবিবপুর কেন্দ্রের বিধায়ক খগেন মুর্মু বিজেপিতে যোগ দিলে সেখানে উপনির্বাচন হয় । তাতে জয় পায় বিজেপি । এই অবস্থায় একুশের ভোটে ফের বাম-কংগ্রেসের জোট হতে চলেছে । ইতিমধ্যে 193টি আসনে জোট প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে । এই পরিস্থিতিতে মালদায় জোটের আসন রফা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
মালদায় আসন রফা নিয়ে বিরোধ বাম - কংগ্রেসে ? উঠছে প্রশ্ন
বাম কংগ্রেস জোট নিয়ে কি মালদা জেলায় মতবিরোধ তৈরি হয়েছে ? এমনই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে ৷ যদিও তাতে আমল দিচ্ছেন না বাম বা কংগ্রেস নেতারা ৷
আরও পড়ুন : কালিয়াচকে তৃণমূল নেতার বাড়িতে সালিশি সভায় গুলি, মৃত যুবক; জখম এক
জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরির অনুপস্থিতিতে মালদায় দলীয় সংগঠন মূলত দেখাশোনা করেন তাঁর বিধায়ক পুত্র ইশা খান চৌধুরী । এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইশা সাহেব বলেন, "এটা পুরোপুরি ভুল খবর । আমরা অন্যান্য জেলার মতো মালদার 12টি আসন নিয়েও গোপন রিপোর্ট প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে পাঠিয়েছি । সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই প্রদেশের তরফে বামেদের কাছে আসন দাবি করা হবে । আমরা কখনই 12টি আসন দাবি করিনি । যতদূর শুনেছি, যে আসনে যারা জয়ী হয়েছিল, সেভাবেই এবার আসন রফা হতে চলেছে । তবে এটা 2016 সালের নির্বাচনের ভিত্তিতে নাকি পরবর্তীতে উপনির্বাচনের ফলাফল সেই অংকে আসবে, তা এখনও জানি না । আর যে আসনগুলিতে বিজেপি জিতেছে কিংবা যেখানে নির্দল প্রার্থী ছিলেন, সেখানে কোন হিসাবে আসন রফা হবে সেটাও এখনও জানা নেই । আমরা এ নিয়ে প্রদেশের সঙ্গে কথা বলব ।"
অন্যদিকে, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অম্বর মিত্র বলেন, "193টি আসনে রফা চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি রয়েছে 101টি। 193টি আসনে যদি মসৃণভাবে আসন রফা হতে পারে তবে বাকি আসনগুলিতেও সেভাবেই হবে। এবারের ভোটে বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে কোনওভাবেই আসন রফা নিয়ে কেউ গোলমাল চান না। আলোচনার মাধ্যমেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে। 2016 সালে তৃণমূল এই জেলায় শূন্য হয়েছিল। একটি আসন বিজেপি অল্প ভোটে জিতেছিল। এবারও তৃণমূল এখানে একটিও আসন পাবে না। আর বিজেপির জেতা আসনটি এবার পুনরুদ্ধার করতে হবে। আসন রফা নিয়ে কোনও ভুল বোঝাবুঝি হলে লড়াইটা শক্তিশালী হয় না। আমরা এখন অপেক্ষা করছি 294টি আসনে বাম, কংগ্রেস ও সহযোগী দলগুলির রফা কবে চূড়ান্ত হয়। ষোলোর ভোটে ইংরেজবাজার আসনে নির্দল প্রার্থী থাকলেও সেই প্রার্থী আমাদের তরফেই নির্বাচিত করা হয়েছিল।"