পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

চারমাস ধরে জলমগ্ন ওয়ার্ড, প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ

চার মাস ধরে 13 নম্বর ওয়ার্ডের গান্ধি কলোনির রাস্তায় জমে রয়েছে জল ৷ সেই জল পচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ৷ এই জলই হয়ে উঠেছে মশার আতুঁরঘর ৷ কোরোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা ৷ প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও তুলছেন তাঁরা ৷

By

Published : Aug 2, 2020, 9:20 PM IST

Updated : Aug 2, 2020, 10:28 PM IST

চারমাস ধরে জলমগ্ন ওয়ার্ড
চারমাস ধরে জলমগ্ন ওয়ার্ড

মালদা, 2 অগাস্ট : একে কোরোনা সংক্রমণ ৷ তার উপর এবার দোসর হয়েছে ডেঙ্গি ৷ দুই আতঙ্ক নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন পুরাতন মালদার পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ৷ প্রায় চার মাস ধরে ওই ওয়ার্ডের গান্ধি কলোনির রাস্তায় জমে রয়েছে জল ৷ সেই জল পচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ৷ এই জলই হয়ে উঠেছে মশার আতুঁরঘর ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার প্রশাসক ও বিদায়ী কাউন্সিলরের উদাসীনতার কারণেই এই দশা ৷ জমা জল দ্রুত নিষ্কাশনের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা ৷

পুরাতন মালদা পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডটি শহরের একপাশে ৷ ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে গিয়েছে রেললাইন ৷ গান্ধি কলোনি এলাকাটি নিচু হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমে যায় ৷ এখনও পর্যন্ত নেই কোনও নিকাশি ব্যবস্থা ৷ সম্প্রতি রেললাইনের পাশে একটি উঁচু রাস্তা তৈরি হওয়ায় নিকাশি ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে এলাকার জমা জল নিষ্কাশনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ পাম্প ব্যবহারের চেষ্টা করেও সফল হয়নি ৷ কারণ, যেখানে এই জল নিষ্কাশন করে ফেলা হচ্ছিল সেখানে রয়েছে কৃষিজমি ও পুকুর ৷ জমি ও পুকুর মালিকরা পৌর কর্তৃপক্ষকে সেখানে দূষিত জল ফেলতে বাধা দেয় ৷ তাই গত চার মাস ধরে এলাকার জল নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না ৷ জমা জলে সাপ, বিভিন্ন পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ বাড়ছে মশাও ৷ এই জমা জলের কারণে সমস্যায় এলাকার 60টি পরিবার ৷

স্থানীয় বাসিন্দা নন্দরানি ঘোষ বলেন, "বছরের বেশিরভাগ সময়ই জলে ডুবে থাকতে হয় ৷ জমা জলে চলাচল করার জন্য আমাদের চর্মরোগ হচ্ছে ৷ চার মাস ধরে জল শুকোচ্ছে না ৷ জমা জলে সাপ-সহ বিভিন্ন পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ এই জল মশার আতুঁরঘরে পরিণত হয়েছে ৷ ইতিমধ্যে এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ অনেকবার কাউন্সিলর ও পৌরসভার চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি ৷ কোনও লাভ হয়নি ৷ উলটে চেয়ারম্যান আমাদের বলেছেন, ডোবা জায়গায় বাড়ি কেন করেছেন ? পৌর কর্তৃপক্ষের এমন নিষ্পৃহতায় তিতিবিরক্ত সবাই ৷ আমরা চাই জমা জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা করা হোক ৷"

চারমাস ধরে জলমগ্ন ওয়ার্ড

এলাকার আর এক বাসিন্দা পার্থ ঘোষ বলেন, "এলাকায় প্রতিবার হাঁটু সমান জল জমে ৷ এবারও জমেছে ৷ বিষয়টি জানালে চেয়ারম্যান একটা পাম্প বসিয়েছিলেন ৷ পরদিন কাউন্সিলর সেই পাম্প খুলে নিয়ে চলে যান ৷ তাঁর বক্তব্য, এটা ডোবাপাড়া ৷ ডুবেই থাকবে ৷ রোদের তাপে জল শুকোবে ৷ ইতিমধ্যে দু'জনকে সাপে কেটেছে ৷ গত বছর ডেঙ্গিতে একজন মারা গিয়েছেন ৷ এবারও মশার লার্ভা জলে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে ৷ এখনও পর্যন্ত এলাকায় ব্লিচিং পাউডার বা অন্য কিছু জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়নি ৷ এর আগে একটি ড্রেন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি ৷ এভাবেই আমাদের থাকতে হচ্ছে ৷"

এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর পরিতোষ ঘোষ জল জমার জন্য কার্যত এলাকাবাসীদেরই দায়ি করেছেন ৷ বলেন, "গান্ধি কলোনি এমনিতেই নিচু এলাকা ৷ ওখানে আগেই জল জমত ৷ সেই জায়গায় কিছু লোক বাড়ি করেছে ৷ তারা বাড়ি উঁচু করতে একডালি মাটিও ফেলে না ৷ আমরা ওখানে ড্রেন করতে পারছি না ৷ তাও এবার দুই দফায় একবার 16দিন আর একবার পাঁচদিন জল পাম্প করে বের করে দিয়েছি ৷ এদিকে, প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে ৷ পাম্প করে সেই জল কোথা ফেলব ? নদী এখন ভরতি ৷ হাইড্রেনের স্লুইস গেট বন্ধ করা রয়েছে ৷ সেখানেও জল ফেলা যাবে না ৷ ড্রেনের ওপারে জল ফেললে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷ কারণ, সেখানে পুকুরে মাছ চাষ করা হয় ৷ তাই গান্ধি কলোনিতে পাঁচ-ছয়টি বাড়ি এই জমা জলের সমস্যায় ভুগছে ৷ এরা নিজেদের বাড়ি সংস্কারও করে না ৷ এই সমস্যা সমাধান করা কঠিন ৷ মানুষের স্বভাবের জন্যই ওই এলাকার জমা জল দূষিত হয়ে গিয়েছে ৷ নিজেরাই জলের মধ্যে আবর্জনা ফেলে এলাকায় দূষণ ছড়ায় ৷"

Last Updated : Aug 2, 2020, 10:28 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details