মালদা, 23 জুলাই : বিপদসীমা পার করে আরও বাড়ছে ফুলহর ও মহানন্দার জলস্তর ৷ ইতিমধ্যে ফুলহরের অসংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে ৷ জলবন্দী কয়েক হাজার মানুষ ৷ গত বছর কাহালা-দেবীপুর রিংবাঁধের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় ভাঙা অংশের পাশে কোর ওয়াল তৈরি করে নদীর জল আটকানোর চেষ্টা করছে জেলা সেচ দপ্তরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্ট ডিভিশন ৷ তবে সেই চেষ্টা কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷
কিছুদিন ধরে জলস্তর বেড়ে চলেছে জেলার নদীগুলির ৷ তবে, গত কয়েকদিন ধরে গঙ্গার জলস্তর কমতির দিকে ৷ জেলা সেচ বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, আজও জল কমছে গঙ্গার ৷ সকালে নদীর জলস্তর ছিল 24.10 মিটার ৷ বিপদসীমা 24.69 মিটার থেকে 59 সেন্টিমিটার নিচে ৷ তবে বিপজ্জনকভাবে জল বাড়ছে ফুলহর ও মহানন্দার ৷ আজ সকালে ফুলহরের জলস্তর ছিল 27.57 মিটার ৷ বিপদসীমা 27.43 মিটার থেকে 14 সেন্টিমিটার উঁচু দিয়ে বইছে নদী ৷ আরও খারাপ পরিস্থিতি মহানন্দার ৷ আজ সকালে মহানন্দার জলস্তর ছিল 21.49 মিটার ৷ বিপদসীমা 21.00 মিটার থেকে 49 সেন্টিমিটার বেশি ৷ যে গতিতে জল বাড়ছে, তাতে আর কয়েকদিনের মধ্যে মহানন্দা তার চরম বিপদসীমা 21.75 মিটার উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
গত বছর ফুলহরের বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা ৷ এবারও নদীর ভাবগতি ভালো ঠেকছে না বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা । গত বছর কাহালা-দেবীপুর রিংবাঁধের বেশ কিছুটা অংশ জলের তোড়ে ভেসে যায় ৷ এবার বর্ষা শুরুর পর বাঁধের ভাঙা অংশের পাশে শালবল্লা ও বালি-মাটির বস্তা দিয়ে একটি কোর ওয়াল তৈরি করেছে সেচ বিভাগ ৷ যদিও এই কোর ওয়াল নদীর জলের চাপ কতটা ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকায় ৷ ইতিমধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর ও দক্ষিণ ভাকুড়িয়া, কাওয়াডোল, রামায়ণপুর, মিঞাহাট প্রভৃতি গ্রামের অসংরক্ষিত এলাকায় ফুলহরের জল ঢুকতে শুরু করেছে ৷ অসংরক্ষিত এলাকার প্রচুর আমবাগান এখন জলের তলায় ৷ জলবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ ৷ একই পরিস্থিতি মহানন্দারও ৷ এই নদীর অসংরক্ষিত এলাকাতেও জল ঢুকতে শুরু করেছে ৷
তবে এখনই এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়নি বলেই মনে করছেন জেলা সেচ বিভাগের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্ট ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ বাদিরুদ্দিন শেখ । বলেন, “আপাতত অসংরক্ষিত এলাকাতেই ফুলহরের জল ঢুকতে শুরু করেছে ৷ কাহালা-দেবীপুর ক্ষতিগ্রস্ত রিংবাঁধের পাশে কোর ওয়াল তৈরির কাজ প্রায় শেষ ৷ এই কোর ওয়াল অবশ্যই নদীর জলের চাপ সামাল দেবে ৷ সেচকর্মীরা 24 ঘণ্টা এই কোর ওয়ালের উপর নজর রাখছে ৷ চিন্তার কোনও কারণ নেই ৷”