পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

প্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ, জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ - সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরির কাটমানি

মালদায় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠল কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ । তারই প্রতিবাদে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাল গ্রামবাসীরা । এছাড়া তারা ডেপুটেশনও জমা দেয় ।

সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরি
সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরি

By

Published : Dec 2, 2020, 2:59 PM IST

মালদা, 2 ডিসেম্বর : সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরির জন্য গরিব মানুষের কাছ থেকে কাটমানি দাবি করছে পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা ৷ একজনের বরাদ্দ ঘরের টাকা চলে যাচ্ছে অন্যজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৷ প্রধানের যোগসাজশেই এই ঘটনা ঘটছে ৷ শুধু তাই নয়, সমব্যথীর মতো প্রকল্পের টাকা থেকেও গরিব মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে ৷ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে গতকাল মালদা জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাল কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক বাসিন্দা ৷ তারা এনিয়ে জেলাশাসকের কাছে একটি ডেপুটেশনও দিয়েছে ৷ পরে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ যদিও নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান ৷ এই ঘটনায় BJP যোগের অভিযোগ তুলেছেন তিনি ৷

কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা গরিব মানুষদের নামে সম্প্রতি সরকারি প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ হয়েছে ৷ কিন্তু সেই ঘরের জন্য পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা 15 থেকে 20 হাজার টাকা দাবি করছে ৷ শুধু তাই নয়, যাদের নামে প্রথম কিস্তির টাকা এসেছে, তাদের টাকা অন্যজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ৷ এক গ্রামবাসী ধীরেন মণ্ডল বলেন, “ঘরের টাকা পাচ্ছি না ৷ জবকার্ডের টাকা পাচ্ছি না ৷ শুধু আমি নই, অনেক লোকই এই টাকা পায়নি ৷ আজ আমরা জেলাশাসককে গোটা বিষয়টি জানাতে এসেছি ৷ কাজ না হলে আমরা হাইকোর্টে মামলা করব ৷”

গতকাল জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাপ্পা মণ্ডল বলেন, “2017-18 অর্থবর্ষে যে উপভোক্তাদের নামে সরকারি প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ হয়েছে, তাদের অনেকেই টাকা পায়নি ৷ একজনের টাকা অন্যজনের অ্যাকাউন্টে ঢোকানো হচ্ছে ৷ শুধু তাই নয়, একজনের নামে বরাদ্দ বাড়ি অন্যজনকে দেওয়া হচ্ছে ৷ এসব কী করে হয় ? এখানে সমব্যথী প্রকল্পের টাকাও উপভোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে না ৷ জবকার্ডের টাকা দেওয়া হচ্ছে না ৷ তাই আজ আমরা জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে ধরনায় বসেছি ৷ এসব দুর্নীতির সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধানই পুরোপুরি জড়িত ৷ এনিয়ে আজ আমরা থানাতেও অভিযোগ জানাচ্ছি ৷ এতেও সমস্যার সুরাহা না হলে আমরা প্রধানের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে বাধ্য হব ৷”

এদিকে কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সত্যজিৎ চৌধুরি জানাচ্ছেন, “উপভোক্তাদের নিজেদের ভুলে তারা সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরির টাকা পাচ্ছে না ৷ তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য তারা যখন নথিপত্র জমা দিয়েছিল, তখন তাদের অনেকে অন্যের জবকার্ড সেই নথিতে যোগ করেছিল ৷ এই প্রকল্পে ঘর পেতে গেলে জবকার্ড থাকা জরুরি ৷ কিন্তু অনেকের জবকার্ড না থাকায় তারা এই পন্থা নেয় ৷ ফলে এখন সেই জবকার্ড হোল্ডারের অ্যাকাউন্টে ঘরের প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকে গিয়েছে ৷ আর সমব্যথী প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে তা পুরোপুরি মিথ্যে ৷ আমাদের এমন দশা হয়নি যে ওই প্রকল্পের টাকা নিতে হবে ৷ উলটে এলাকার কেউ মারা গেলে আমরাই নিজেদের পকেট থেকে দু’হাজার টাকা পরিবারের লোকজনকে দিয়ে দিই ৷ পরে সেই টাকা এলে আমরা উপভোক্তাদের জানাই ৷ কেউ আমাদের টাকা ফেরত দেয়, কেউ দেয় না ৷ আসলে এসব BJP-র চক্রান্ত ৷ তারাই গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে উসকাচ্ছে ৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details