মালদা, 18 মার্চ:পঞ্চায়েতে রাজনীতির প্যাঁচ ৷ তার জেরে অন্তত তিন বছর ধরে পানীয় জল থেকে ব্রাত্য গ্রামের মানুষ ৷ পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ৷ তাতেও কাজ হয়নি ৷ রাজনীতির জটিলতায় বেশ কয়েকটি গ্রামে জলকষ্ট যে রয়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন খোদ পঞ্চায়েত প্রধানও ৷ ঘটনাটি পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৷ রাজনীতির জটিলতায় পানীয় জল নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় দক্ষিণ ভাটরা গ্রাম (Villagers not getting drinking water for last three years) ৷
শ’সাতেক বাসিন্দার অধিকাংশই আদিবাসী ৷ গ্রামের মূল অর্থনীতি কৃষিকাজ ৷ পানীয় জলের জন্য একসময় গ্রামে একটি সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়েছিল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ৷ পাম্পের উপর বসানো হয়েছিল জলাধার ৷ এমনকী গ্রামে 11টি সরকারি নলকূপও ছিল ৷ কিন্তু তিন বছর ধরে সেসব খারাপ ৷ কোনওটিই আর ঠিক হয়নি ৷ গরিব গ্রামবাসীদের পক্ষে সেসব ঠিক করাও সম্ভব নয় ৷ তাই কয়েক কিলোমিটার হেঁটে অন্য গ্রাম থেকে তাঁদের পানীয় জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে ৷ নয়তো চাষের মাঠে কেউ সাবমার্সিবল পাম্প চালালে সেখান থেকে তাঁরা জল নিয়ে আসছেন ৷ এদিকে খরা মরশুম চলে এসেছে ৷ পানীয় জলের সংকট মেটাতে তাঁরা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন ৷ পঞ্চায়েত সদস্য বিষয়টি জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষকে ৷ কাজ হচ্ছে না ৷ কবে হবে, সেটাও কেউ জানে না ৷
গ্রামবাসী চাঁদমণি কিস্কু বলছেন, "তিন বছরের বেশি সময় ধরে গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই ৷ অনেক দূর থেকে পানীয় জল আনছি ৷ অন্য গ্রামের মানুষ আমাদের জল দিতে চায় না ৷ বলে, আমরা যেন গ্রামের মার্শাল ঠিক করে নিই ৷ এক গ্রামবাসী নিজের জমিতে জল দেওয়ার জন্য পাম্প বসিয়েছে ৷ সে যখন জমিতে জল দেয়, তখন মাঝেমধ্যে সেখান জল নিয়ে আসি ৷ পাম্পটা ঠিক করে দেওয়ার জন্য নেতাদের বারবার বলছি ৷ কিন্তু ওরা শুধু ভোট নিয়ে চলে যায় ৷ আমরা গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা চাই ৷"
আরেক গ্রামবাসী সন্তোষ কিস্কুও জানান, গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা না-থাকায় তিন বছর ধরে মহিলাদের দূর থেকে তা নিয়ে আনতে হয় ৷ অন্য গ্রামের বাসিন্দারা তাদের পাম্প থেকে আর জল দিতে চায় না ৷ তারা বিদ্যুতের বিল দাবি করছে ৷ গ্রামের দু’একজনের জমিতে পাম্প রয়েছে ৷ তবে তারা জমিতে জল দিলে তবেই সেখান থেকে জল পাওয়া যায় ৷ সবসময় পাওয়া যায় না ৷ তাদের পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন ৷ কিন্তু তিনি কংগ্রেসের সদস্য ৷ হয়তো সেকারণেই তাঁর কথায় কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না ৷