রাস্তা সংস্কার না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি গ্রামবাসীদের মালদা, 11 মে: আর কোনও প্রতিশ্রুতি নয় ৷ গোটা গ্রামের একটাই আওয়াজ, 'আগে রাস্তা, পরে ভোট' ৷ বেহাল রাস্তা সংস্কারের জন্য এর আগে বহু আবেদন নিবেদন হয়েছে ৷ কাজ না-হওয়ায় এবার এই রাস্তা নিয়েই ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি গ্রামবাসীদের ৷ ঘটনাটি চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের নগাছিয়া শিহিপুর গ্রামের ৷ বেহাল রাস্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভও দেখান গ্রামের বাসিন্দারা ৷ গ্রামীণ ভোটের মুখে এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও ৷
চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলেরই দখলে ৷ তবে নগাছিয়া শিহিপুর বুথে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী ৷ গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দশকের পর দশক পেরিয়ে গিয়েছে ৷ অনেক নেতা বদলেছে ৷ কিন্তু গ্রামের রাস্তা সেই পুরোনো সময়েই রয়ে গিয়েছে ৷ শুধু রাস্তা নয়, এই গ্রামে পানীয় জল, বিদ্যুতেরও প্রচুর সমস্যা রয়েছে ৷ এসব নিয়ে পঞ্চায়েতে দিস্তা দিস্তা আবেদনপত্র জমা পড়েছে ৷ কিন্তু কাজ হয়নি ৷ এই বুথ থেকে সিপিএম প্রার্থী জেতার জন্যই গ্রামের উন্নয়নে চোখ নেই তৃণমূলের ৷ তাই এবার তাঁরা ভোট বয়কটের পথে পা বাড়িয়ে রেখেছেন ৷
সিপিএমের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এসানুল হকের বক্তব্য, গ্রামের সব সমস্যা মেটাতে তিনি বহুবার পঞ্চায়েতে প্রকল্প জমা করেছেন ৷ সেসব প্রকল্প কম্পিউটারে আপলোডও করা রয়েছে ৷ কিন্তু যেহেতু তিনি বিরোধী সদস্য, তাই তাদের এলাকায় পর্যাপ্ত কাজ দেওয়া হয় না ৷ 10টি প্রকল্প জমা দিলে দুটির অনুমোদন মেলে ৷
এক গ্রামবাসী সুপর্ণা মণ্ডল বলেন, "বাচ্চারা রাস্তার জন্য স্কুলে যেতে পারছে না ৷ তাই ঠিক করেছি, রাস্তা না হলে এবার আমরা ভোট দেব না ৷" আরেক গ্রামবাসী রতন ঘোষ বলেন, "ক’দিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চাঁচলে এসে বলে গেলেন, এখানে নাকি সব রাস্তা পাকা করে দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু আমার 40 বছর বয়স হয়ে গেলেও রাস্তা কাঁচাই দেখছি ৷ সামনে বর্ষা আসছে ৷ বাচ্চারা স্কুলে যাবে কী করে ! পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদের লোকজন এখানে এসে শুধু বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে ৷ রাস্তার মাপ নিয়ে যাচ্ছে ৷ কিন্তু রাস্তা আর হয়নি ৷ বৃষ্টি হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁচা রাস্তায় এক হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায় ৷ তাই আজ আমরা বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছি ৷ রাস্তা না হলে এবার আমরা ভোট বয়কট করব ৷"
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের এ নিয়ে চাঁচলের বাসিন্দা তথা তৃণমূল পরিচালিত মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেনের বক্তব্য, সবাই জানে, কাজের ক্ষেত্রে চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েত কাউকে বঞ্চিত করেনি ৷ রাস্তার সঠিক জায়গা জানালে বিডিও, জেলা পরিষদের সদস্যরা সমস্যার সমাধান করতেন ৷ তিনি বলেন, "বিষয়টি দেখছি ৷ ওই গ্রামেও যাব৷ আর বিরোধীদের বলব, উলটোপালটা কথা না বলে উন্নয়নের কাজে আমাদের সহায়তা করুন ৷ শুধু রাজনীতির জন্য বিরোধিতা করলে সমস্যা কমে না ৷ বরং বাড়ে ৷"
আরও পড়ুন:বেহাল রাস্তায় ডুলিতে হাসপাতালে রোগী, পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি চিলাপাড়া গ্রামের