মালদা, 15 জুলাই: মাত্র 30 সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ ৷ সেটাই এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল মালদার স্ট্রং রুমের সেই ভিডিয়ো ৷ যে ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্ট্রং রুমে রয়েছেন ইংরেজবাজার ব্লকের তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী প্রতিভা সিং ৷ সেখানে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ কর্মীরাও ৷ মূল স্ট্রং রুমে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ৷ সেখানেই দেখা যাচ্ছে, প্রতিভা সিং কাউকে কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন ৷ আর তারপরই ভিতর থেকে সিল করা ব্যালট বাক্স বাইরে পাচার করছেন একজন ৷ ইটিভি ভারত এই ভিডিও ক্লিপের সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি ৷ তবে এই ভিডিয়ো ক্লিপ দেখে সরব বিরোধীরা ৷ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা ৷ যদিও শাসকদলের তরফে গোটা ঘটনাটিকে মিথ্যে বলে দাবি করা হয়েছে ৷
বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কৌশিক মিশ্র জানান, বিভিন্ন বুথের ব্যালট বাক্স যে ওলটপালট করা হয়েছে, তা প্রমাণিত ৷ বাক্স থেকে প্রচুর ব্যালট পেপার বের করে অন্য ব্যালটে ঢোকানো হয়েছে ৷ কাউন্টিংয়ের সময় অসংখ্য ব্যালট পেপারে প্রিসাইডিং অফিসারের সিল কিংবা স্বাক্ষর ছিল না বলেও অভিযোগ ৷ মালদা জেলা স্কুলের গণনাকেন্দ্রের বাইরে ছাপ মারা ব্যালট পেপার পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ৷ জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই এই ব্যালট পেপার পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ৷ তাঁর দাবি, এসব থেকেই প্রমাণিত, প্রশাসনকে ব্যবহার করে তৃণমূল ব্যালট লুঠ করেছে ৷ তিনি বলেন, "আমি একে সরকারি রিগিং বলব ৷ এতে গোটা প্রশাসন জড়িত ৷ আমরা গোটা রাত স্ট্রং রুম পাহারা দিয়েছি ৷ সকালে স্ট্রং রুম খোলার সময়ও আমাদের প্রতিনিধিরা ছিল ৷ তার মধ্যে ওরা যে কোনও উপায়ে ব্যালট বাক্স বদল করেছে ৷ একটি বুথে তৃণমূল দুই হাজার 416, বিজেপি 688 আর জোটের কংগ্রেস প্রার্থী 41টি ভোট পেয়েছেন ৷ একটি বুথে কত ভোটার থাকে? আসলে জাল ব্যালট ভরার সময় ওদের এসব মাথায় ছিল না ৷ এই ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি ৷ আগামী 18 তারিখ এসব নিয়ে আদালত রায় শোনাবে ৷ আমরা সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছি ৷”
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোত্তাকিন আলম বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, ভোটে তৃণমূল সন্ত্রাস করবে ৷ সেটাই হয়েছে ৷ হার্মাদ, পুলিশ আর প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তারা ভোটে জিতেছে ৷ এখন যেখান সেখান থেকে ছাপ মারা ব্যালট উদ্ধার হচ্ছে ৷ এই ভোটে বিরোধীরা বহু আশা নিয়ে লড়াই করেছে ৷ আমরা অনেক বুথে তৃণমূলকে ছাপ্পা দিতে দিইনি ৷ কিন্তু স্ট্রং রুমে ছাপ্পা হয়ে গিয়েছে ৷ স্ট্রং রুমে ব্যালট ওলটপালট করার জন্যই এই জেলায় 11টার আগে গণনা শুরু হয়নি ৷ এটা নির্বাচন না, প্রহসন হয়েছে ৷ আমরা ইতিমধ্যে তথ্য প্রমাণ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করতে শুরু করেছি ৷ আগামিকাল পর্যন্ত আমাদের সমস্ত তথ্য কোর্টে জমা পড়বে ৷"