মালদা, 23মে : দিল্লি থেকে মালদায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু দুই পরিযায়ী শ্রমিকের । আহত আরও কয়েকজন । উত্তরপ্রদেশে জাতীয় সড়কে বাসের টায়ার মেরামতির সময় অন্য একটি বাস তাঁদের পিষে দেয় । মৃতদের নাম মহবুল আলি (28) এবং জাহের আলি (৩০) । গতরাতে তাঁদের মৃত্যু হয় । মৃত্যু হয়েছে বাসচালকেরও ।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের বেজপুরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন মহবুল আলি । জাহের ছিলেন চাঁচল ১ ব্লকের ডোমাপীর গ্রামের বাসিন্দা ৷ দিল্লিতে কাজ করতেন তাঁরা । লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ । হাতে টাকাও প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল । সে কারণে শীঘ্রই বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন তাঁরা । বাড়িতে সেই মতোই কথা হয়েছিল । বাসে করে দিল্লি থেকে মালদা ফিরছিলেন তাঁরা । গতকাল বিকেলেও বাড়িতে কথা হয়েছিল । জাহের জানিয়েছিলেন তিনি বাড়ি ফিরছেন, উত্তরপ্রদেশে পৌঁছে গিয়েছে । জাহেরের বিবি অন্তঃসত্ত্বা । বাড়িতে পাঁচ বছরের একটি মেয়ে আছে । পরিবার নির্ভর করে জাহেরের উপরেই ।
জাহেরের শ্যালক আলি হাসান বলেন, “ওঁরা দিল্লি থেকে গ্রামে ফেরার জন্য একটি বাস ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলেন ৷ ফিরোজ়াবাদ জাতীয় সড়কে গাড়ির টায়ার পাংচার হয়ে যায় ৷ টায়ার সারাইয়ের কাজ চলছিল ৷ ওঁরা তিন-চারজন মিলে টায়ার সারাই করছিল ৷ সেই সময় পিছন থেকে আরেকটি গাড়ি তাঁদের পিষে দিয়ে চলে যায় ৷ আরও একজন আহত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি ৷ তবে তাঁদের পরিচয় আমরা জানতে পারিনি ৷ ওই বাসে গ্রামের আরও দু’জন ছিলেন ৷ তাঁরাই ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দেয় ৷ এখন সরকারের কাছে দু’জনের মৃতদেহ গ্রামে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানাচ্ছি ৷ পরিবারে শুধুমাত্র জাহেরই উপার্জন করতেন ৷ ওঁদের একটি পাঁচ বছরের মেয়ে রয়েছে ৷ দিদি গর্ভবতী ৷ এখন ওঁদের সংসার কীভাবে চলবে তাই ভাবছি ৷”
মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাহেরের বিবি রুমা বিবি । তিনি বলেন, “2014 সালে বিয়ে হয়েছিল ৷ জাহের দিল্লিতে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করত ৷ দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে কাজ করতে যায় ৷ মাস তিনেক আগে সে ওখানে কাজ করতে গিয়েছিল ৷ গতকাল বিকেলে ফোন করে জানায়, ওদের বাস উত্তরপ্রদেশে ঢুকে গিয়েছে ৷ তারপরেই খবর এল দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে জাহের ৷ আমি কিছু ভাবতে পারছি না ৷ কীভাবে ওর দেহ বাড়ি আসবে তাও জানি না ৷”