মালদা, 19 মার্চ : সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন নাকচ হয়েছিল আগেই ৷ এই পরিপ্রেক্ষিতেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত 14 দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে শেষে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন বন্যা কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আফসার হোসেন (Trinamool Congress Leader Surrenders to Police After Supreme Court Denies Bail in Flood Case) । গতকাল চাঁচল মহকুমা আদালতের অনুমতিক্রমে তাঁকে 14 দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ ।
প্রসঙ্গত, 2017 সালে ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়ে উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা । অসংখ্য বাড়ি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় । আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হন হাজার হাজার মানুষ । সেই সময় রাজ্য সরকারের তরফে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে 70 হাজার টাকা আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের 3300 টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় । ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের 7394 জনের নাম ছিল । কিন্তু অভিযোগ ওঠে, এক্ষেত্রে প্রায় 76 লক্ষ টাকা উপভোক্তাদের না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতৃত্ব ।
আরও পড়ুন : Father-Son Attacked by Goons : অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় তিলজলায় আক্রান্ত বাবা-ছেলে, চলল গুলি
এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বেশ কয়েকটি মামলা রুজু হয় । হাইকোর্ট বন্যাত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় তদন্ত করার নির্দেশ দেয় । আগে গোটা ঘটনা নিয়ে গ্রামবাসী-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও প্রশাসনিক কর্তাদের হেলদোল দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ ।
শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশে বরুই পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রৌশনারা খাতুন এবং এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তথা প্রাথমিক শিক্ষক আফসার হোসেনের নামে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এফআইআর করতে কার্যত বাধ্য হন বিডিও । কিন্তু তারপর থেকেই তিনজনের খোঁজ নেই বলে দাবি করেছিল পুলিশ। একসময় তিনজনই সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেন, কিন্তু তা নাকচ হয়ে যায় । শেষ পর্যন্ত হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন আফসার। বাকি দু’জন অবশ্য এখনও পলাতক।