পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

TMC Factionalism: মালদায় মাদ্রাসা নির্বাচনে গোলমাল নিয়ে দলের দুই নেতাকে কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূলের ফজলুল হক - অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে তৃণমূলে গৃহযুদ্ধ ! মালদায় দলের জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ভোটে বোমা-গুলি প্রয়োগের অভিযোগ শাসকদলের নেতার ৷

TMC Factionalism
TMC Factionalism

By

Published : Feb 6, 2023, 5:28 PM IST

মালদায় মাদ্রাসা নির্বাচনে গোলমাল নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার বাকযুদ্ধ

মালদা, 6 ফেব্রুয়ারি:মাদ্রাসা নির্বাচনে বোমাবাজি ও গুলি চলার ঘটনা (Madrasah Election Violence)নিয়ে সোমবার বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন মালদার (Malda) রতুয়া-1 ব্লকে তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ফজলুল হক ৷ তাঁর দাবি, নিজেদের শক্তি জাহির করতেই গতকাল দলের জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান সামান্য মাদ্রাসা নির্বাচনে বোমা-গুলির আমদানি করেছেন ৷ এভাবে চললে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতেই পারবে না ৷ তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালটে ছাপ্পা মারারও অভিযোগ করেছেন ৷ যদিও তাঁর অভিযোগকে গুরুত্বই দিতে রাজি নন দলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ৷ উলটে তিনি ফজলুল সাহেবের বিরুদ্ধে সিপিএম (CPIM) ও কংগ্রেস (Congress) যোগাযোগ রাখার অভিযোগ তুলেছেন ৷

অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ভোটযুদ্ধে নামার আগে রতুয়া-1 ব্লকের বাটনা মাদ্রাসার পরিচালন কমিটির নির্বাচন ঘিরে গতকাল গৃহযুদ্ধে নেমেছিল তৃণমূলের দুই শিবির (Trinamool Congress Factionalism in Malda) ৷ একপক্ষে ছিলেন খোদ দলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ও দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা এলাকার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ অন্যপক্ষে ছিলেন রতুয়া-1 ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা এলাকার প্রভাবশালী নেতা ফজলুল হক ও দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ হেসামুদ্দিন ৷ এই নির্বাচন ঘিরে গতকাল দিনভর উত্তপ্ত ছিল বাটনা এলাকা ৷ পড়েছে বোমা, চলেছে গুলি৷ একজন গুলিবিদ্ধও হয়েছেন ৷ একাধিক বাড়িঘর এবং মোটরবাইকও ভাঙচুর হয়েছে ৷ যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি নির্বাচনকে ‘শান্তিপূর্ণ’ বলেই দাবি করেছেন ৷ গভীর রাতে ভোটের ফল বেরোলে দেখা যায়, রহিম সাহেব ও সমরবাবুর প্যানেলের ছয় প্রার্থীই জয়ী হয়েছেন ৷

এই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন ফজলুল সাহেব ৷ তিনি বলেন, “দলের জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যান নিজেদের মান রাখতে গতকাল বোমা-গুলি চালাতেও দ্বিধা করেননি ৷ তাঁরা যদি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন এভাবেই করেন, তবে আমার ধারণা, মানুষ ভোট দিতে আসবে না ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, নির্বাচনে কোনও গা-জোয়ারি চলবে না ৷ অথচ তাঁর সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে দলের জেলা সভাপতি রহিম বকসি ও চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায় মাদ্রাসার সামনে উপস্থিত থেকে পুলিশকে দিয়ে ছাপ্পা ভোট করালেন ৷ এতেই প্রমাণিত, তাঁরা দলের নির্দেশ অমান্য করেছেন ৷ এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে মালদা জেলায় তৃণমূলকে শেষ করে দেওয়ার জন্য এঁরা দু’জনই যথেষ্ট ৷ এসব কাজ করে তাঁরা বিরোধীদের বলার সুযোগ করে দিচ্ছেন ৷” ফজলুল সাহেব আরও বলেন, “পুরনো তৃণমূল কর্মীরা আগামিদিনে যাতে দলে থাকতে না পারেন, তাঁরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন ৷’’

তাঁর দাবি, ‘‘এর প্রতিবাদে আমরা সোচ্চার হয়েছি ৷ দলীয় নেতৃত্বকেও বারবার জানাচ্ছি ৷ এই দু’জনকে অবিলম্বে পদ থেকে সরিয়ে নতুন মুখ এনে মালদা জেলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করা হোক ৷ যাতে আমরা আগের মতো উদার মনে তৃণমূল করতে পারি, তার ব্যবস্থা করা হোক ৷ রহিম বকসির যে কতটা ক্ষমতার লোভ, তা আমরা জানি ৷ সমর মুখোপাধ্যায় আর ভোটে লড়বেন না ৷ তিনি প্রমাণ করতে চাইছেন, তাঁকে ছাড়া তৃণমূল এখানে থাকতে পারবে না ৷’’

ফজলুল সাহেবের আরও দাবি, ‘‘এর জন্যই গতকাল বোমা-গুলি চলেছে ৷ নিরপেক্ষ ভোটের জন্য আমরা পুলিশ সুপার, এসডিপিও থেকে শুরু করে রতুয়া থানার আইসিকে আমরা আগেই আবেদন জানিয়েছিলাম ৷ কিন্তু সমর মুখোপাধ্যায় কিংবা রহিম বকসি, যাঁর চাপেই হোক না কেন, তাঁরা নিরপেক্ষ নির্বাচন করাতে পারেননি ৷ আমার কাছে খবর আছে, পুলিশের একটি স্পেশাল টিম মালদা থেকে এসে গতকাল ব্যালটে ছাপ্পা মেরেছে ৷”

ফজলুল সাহেবের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব ৷ তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ফোনে বলেন, “তৃণমূল দলটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তৈরি করেছেন ৷ তিনি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে সন্ত্রাসমুক্ত একটা পরিবেশ দিয়েছেন ৷ মানুষ যাতে এই রাজ্যে মাথা উঁচু করে গণতান্ত্রিক পরিবেশে থাকতে পারে, তার সুযোগ তিনি করে দিয়েছেন ৷ আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক ৷ যিনি এসব কথা বলছেন, তিনি হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শচ্যূত হয়েছেন ৷’’

ফজলুল হকের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, ‘‘হয়তো অন্য কারও সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ তাই ভুল বকছেন ৷ গতকাল মানুষ গণতান্ত্রিক পরিবেশে, উৎসবের আবহে ভোট দিয়েছেন ৷ তিনি যে দাবি করছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যে ও ভিত্তিহীন ৷ তবে এখনও তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ কারণ, দল অনেক সময় নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাই করে ৷ তবে কেউ যদি প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধাচারণ করে, সে দলের লোক কি না আমাদের জানা নেই ৷ এনিয়ে আমরা রাজ্যের কাছে ব্যাখ্যা চাইব ৷ তিনি প্রকাশ্যেই সিপিএম-কংগ্রেসের প্রার্থীদের সমর্থন করেছেন ৷ দলের বিরুদ্ধে বোমা-পিস্তলের বিষয় নিয়ে কথা বলছেন ৷ তিনি দলের কর্মী কিনা তার ব্যাখ্যা রাজ্য নেতৃত্বকে দিতে হবে ৷”

আরও পড়ুন:গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র হাই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা

ABOUT THE AUTHOR

...view details