মালদা, 17 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) ও নাগরিকপঞ্জি বিরোধী আন্দোলনে ব্যাহত জনজীবন ৷ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের জেলাগুলির সঙ্গে দক্ষিণের রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে ৷ মালদা স্টেশনে আটকে পড়েছেন বহু যাত্রী ৷ অনেকে আবার ঝুঁকি নিয়ে বাস ধরে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ৷ রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের ম্যানেজার ৷ এদিকে আজ দুপুরে মালদা থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ ৷ যদিও এই বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সেভাবে প্রচার করা হয়নি৷ তবে আজ এখনও পর্যন্ত জেলার কোথাও থেকে কোনও অশান্তির খবর এসে পৌঁছায়নি ৷ যদিও আজও বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা৷ জেলার বেশ কিছু অংশে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা ৷
বেহাল উত্তর-দক্ষিণ পরিষেবা, বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের - Train dismissed CAA agitation
NRC ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) বিরোধী আন্দোলনের ফলে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের জেলাগুলির সঙ্গে দক্ষিণের রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে । ফলে সমস্যায় পড়েছেন বহু যাত্রী । তবে মালদা স্টেশন থেকে শিয়ালদা যাওয়ার জন্য একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ দুপুর ১২.৪০ মিনিটে সেই ট্রেন ছাড়বে ৷ রাতে নির্দিষ্ট সময়েই ছাড়বে মালদা টাউন-শিয়ালদা গৌর এক্সপ্রেস ৷ পরিস্থিতি অনুযায়ী গতকাল থেকে সেই ট্রেনেও তিনটি অতিরিক্ত কামরা জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷
![বেহাল উত্তর-দক্ষিণ পরিষেবা, বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের image](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/768-512-5401184-thumbnail-3x2-m.jpeg)
দুটি আইনের প্রতিবাদে সামিল গোটা দেশ ৷ গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলেছে এই রাজ্যও ৷ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রেল স্টেশন সহ ট্রেন পোড়ানো হয়েছে ৷ ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার ৷ পোড়ানো হয়েছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বাসও ৷ ভালুকা স্টেশনে প্রায় ১০০ মিটার রেল লাইন উপড়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা ৷ সেই লাইন এখনও মেরামত করা যায়নি ৷ মালদা ডিভিশনের অধীনে থাকা মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু অংশেও রেল লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ৷ এ প্রসঙ্গে DRM যতীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, “রেল নিজের কাজ করছে ৷ আমি সবার কাছে আবেদন জানাচ্ছি, সবাই যেন আমাদের সহযোগিতা করেন ৷ ফরাক্কা থেকে আজিমগঞ্জের মধ্যে রেল লাইনের অনেকটা ক্ষতি হয়েছে ৷ কিন্তু নিমতিতা ও জঙ্গিপুরে বিক্ষোভের কারণে আমাদের কর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না ৷ একটা বিষয় আমি বলে দিতে পারি, রেল লাইন সহ অন্যান্য জিনিসের যে ক্ষতি হয়েছে, তা মেরামত করতে ৫-৬ দিনেরও বেশি সময় লাগবে৷ লাইন মেরামত না হলে ট্রেনও চালানো যাবে না৷ এতে সাধারণ মানুষেরই সমস্যা বাড়বে ৷ তাই সবার কাছে আমাদের আবেদন, কেউ যেন রেলের সম্পত্তি নষ্ট না করেন ৷” তবে রেলের অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে ট্রেন চালাতে 15 দিনেরও বেশি সময় লাগতে পারে ।
এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় মালদা স্টেশনে আটকে পড়েছে বহু যাত্রী ৷ তাদের কেউ কেউ সড়কপথে নিজেদের গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ আবার অনেকে ট্রেনের জন্যই স্টেশনে অপেক্ষা করছেন ৷ সাধারণ মানুষ শুধু নয়, এর মধ্যে রয়েছেন সেনাকর্মীরাও ৷ এমনই এক সেনাকর্মী, বিহারের বাসিন্দা হরিপ্রসাদ বলেন, “অসমে যাওয়ার সমস্ত ট্রেন বাতিল হয়ে গেছে ৷ আমি ডিমাপুরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ৷ দু’দিন ধরে মালদা স্টেশনে বসে রয়েছি ৷ অসম যাওয়ার ট্রেন পাচ্ছি না ৷ কবে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছোতে পারব জানি না ৷” মালদা স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী অন্তত সাত দিন অসমগামী রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে৷ আজও উত্তর থেকে দক্ষিণগামী সমস্ত ট্রেন বাতিল করা হয়েছে ৷ তবে মালদা স্টেশন থেকে শিয়ালদা যাওয়ার জন্য একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ দুপুর ১২.৪০ মিনিটে সেই ট্রেন ছাড়বে ৷ রাতে নির্দিষ্ট সময়েই ছাড়বে মালদা টাউন-শিয়ালদা গৌর এক্সপ্রেস ৷ পরিস্থিতি অনুযায়ী গতকাল থেকে সেই ট্রেনেও তিনটি অতিরিক্ত কামরা জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷