মালদা, 2 জানুয়ারি: তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তারপরেই যেন অতি তৎপর হয়ে উঠেছে মালদার পুলিশ প্রশাসন ৷ অন্তত হরিশ্চন্দ্রপুরে তারই প্রমাণ মিলেছে ৷ বন্যা ত্রাণে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ (TMC Leader Accused of Flood Relief Corruption Arrested Ahead of Panchayat Polls) ৷ অথচ এই নেতাকে নাকি এতদিন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ ধৃতের নাম রাশেদ পারভেজ ওরফে রাজা ৷
এই বিষযটিকে নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও ৷ বিরোধীদের দাবি, বন্যা ত্রাণে দুর্নীতিতে চুনোপুঁটিদের গ্রেফতার করে রাঘববোয়ালদের আড়াল করা হচ্ছে ৷ যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, আইন আইনের পথেই চলবে ৷ অপরাধীদের কোনও রেয়াত করা হবে না ৷
2017 সালে বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছিল উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ৷ রাজ্য সরকার বন্যার্তদের সাহায্যে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করেছিল ৷ কিন্তু, সেই বন্যা ত্রাণের কোটি কোটি টাকায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ৷ শুধুমাত্র বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই 76 লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিরোধীরা ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকে সেই দুর্নীতির পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে 3 কোটি টাকা ৷
এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করা হয়েছিল ৷ আদালতে দুর্নীতির সত্যতা প্রমাণিত হয়ে যায় ৷ আদালতের নির্দেশেই বিডিও অনির্বাণ বসু বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নামে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ৷ তার মধ্যে নাম ছিল পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জয়শ্রী কর্মকার (বর্তমানে তিনি আবার তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর সাংগঠনিক ব্লকের মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী), তাঁর স্বামী বাপি পালের সঙ্গে বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের চয়নপুর গ্রামের বাসিন্দা রাশেদ পারভেজেরও নাম ছিল ৷ জয়শ্রী ও বাপি পুলিশের খাতায় এখনও পলাতক ৷ যদিও, তাঁদের দু’জনকেই এলাকায় প্রকাশ্য সভায় দেখা যাচ্ছে ৷ তবে, শেষ পর্যন্ত রাশেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷