মালদা, 21 মে : আর শাসকদলের কেউ নয়, ইংরেজবাজার পুরসভার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হল প্রশাসনের হাতে ৷ আজ এই পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন সদর মহকুমা শাসক শেখরকুমার চৌধুরী ৷ দায়িত্বভার নিয়েই তিনি পুরসভায় যান ৷ দপ্তরের আধিকারিকদের বৈঠক করে মালদা শহরের মূল সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেন৷
বৈঠকে তিনি জানতে পারেন, বহু বছর ধরে নিকাশি সমস্যায় হাঁসফাঁস করছে এই শহর ৷ এরপরেই বিকেলে তিনি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন ৷ তবে এদিন মহকুমা শাসক সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছেন৷
মালদা শহর নিকাশি সমস্যার জন্য কুখ্যাত ৷ সামান্য বৃষ্টিতেও শহরের অনেক জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়৷ আর ভারি কিংবা টানা বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই৷ কোথাও সপ্তাহ, কোথাও বা জল শুকোতে কয়েক মাস সময় লেগে যায় ৷ এর আগে বিভিন্ন পুরবোর্ড সমস্যা সমাধানের নানা আশ্বাস দিলেও কোনও কাজ হয়নি ৷ সমস্যা রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই ৷ কারণ হিসাবে উঠে এসেছে জমি মাফিয়াদের বিষয় ৷
একসময় মালদা শহরের জমা জল চাতরা ও গোদরাইল নামে দুটি বিল দিয়ে বেরিয়ে যেত ৷ দুটি বিলই আয়তনে বিশাল ৷ কিন্তু এখন বিল দুটিতে থাবা বসেছে জমি মাফিয়াদের ৷ দুটি বিলই ভরাট হয়ে চলেছে ৷ জলাশয়ে তৈরি হচ্ছে বড় বড় বাড়ি ৷ বারবার অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক মদতেই এই কাজ হয়ে চলেছে ৷ মদত রয়েছে প্রশাসনের একাংশেরও ৷ সেকারণেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নথিতে বিলের জমি ডাঙা হিসাবে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে ৷ দুইয়ের দাপটে দিনের আলোয় চলছে বিল বোজানোর কাজ ৷ তাই এখন শহরের জমা জল আর বেরোতে পারে না ৷ সমস্যা সমাধানের জন্য 2019 সালে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের উদ্যোগে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয় ৷ কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু করা যায়নি ৷ তার পিছনেও উঠে এসেছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাহিনি৷
এলাকা পরিদর্শনে মহকুমা শাসক শেখরকুমার চৌধুরী আরও পড়ুন :করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় পিআইসিইউ
সেই মাস্টার প্ল্যানের রূপরেখা ঠিক করতেই আজ বিকেলে পুরসভার তিন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে গোদরাইল বিল দেখতে যান পুরসভার নয়া প্রশাসক ৷ মালদা শহরের বদ্ধ জল কীভাবে নিকাশি নালার মাধ্যমে মহানন্দায় ফেলা যায় তা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন তিনি ৷ তাঁর এই আলোচনা মালদাবাসীকে আশার আলো দেখাবে কিনা, এখন সেটাই দেখার ৷