পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মালদা গণধর্ষণে অভিযুক্তদের আড়াল করতে টাকা নিয়েছিলেন IC ?

গণধর্ষণ কাণ্ডে মালদা থানার IC-র বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ তুলল গ্রামবাসীরা ৷ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা ৷

By

Published : Oct 30, 2019, 7:27 PM IST

ছবিটি প্রতীকী

মালদা, 30 অক্টোবর : গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ উঠল মালদা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ আজ নির্যাতিতার আত্মীয়রা মালদা থানার IC-র সঙ্গে দেখা করে প্রত্যেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ৷ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তাঁরা ৷ এব্যাপারে মালদা থানার পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কোনও অভিযুক্তকেই ছাড়া হবে না ৷ সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে ৷

গত 22 অক্টোবর রাতে মাসির বাড়ি যাওয়ার পথে নবাবগঞ্জের গুজরটোলা ঘাটে গণধর্ষণের শিকার হন মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানা এলাকার এক যুবতি ৷ ওই দিন তিনি রাতে প্রথমে শওহরের সঙ্গে ট্রেনে করে পুরাতন মালদা স্টেশনে নেমেছিলেন ৷ সেখান থেকে এসে পৌঁছেছিলেন নবাবগঞ্জের গুজরটোলা ঘাটে ৷ মহানন্দা নদীর অপর পাড়ে তাঁর মাসির বাড়ি ৷ কিন্তু সম্প্রতি নৌকাডুবির দু'টি ঘটনার পর জেলা প্রশাসন রাতে নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ৷ ঘাটে নৌকা না পেয়ে যুবতি তাঁর মাসির সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন ৷ তাঁর শওহর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন ৷ বছর কুড়ির ওই যুবতির অভিযোগ, সেই সময় ঘাটের পাশে থাকা একটি পাকা বাড়ি থেকে জনা দশেক যুবক তাঁদের সামনে আসে ৷ তাঁর শওহরকে বেধড়ক মারধর শুরু করে ৷ খুনের ভয় দেখিয়ে তারা শওহরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় ৷ এরপর ওই যুবকরা তাঁকে জোর করে সেখান থেকে একটি নির্জন জায়গায় তুলে নিয়ে যায় ৷ সেখানে দুই যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে ৷ শেষ পর্যন্ত তাঁর চিৎকার শুনে এলাকার মানুষজন ঘটনাস্থানে আসায় বাকি যুবকরা তাঁকে ধর্ষণ করতে পারেনি ৷ এলাকার লোকজনই মালদা থানায় খবর দেয় ৷ খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়৷ ততক্ষণে সব ঘটনা শুনে তাঁর মাসির পরিবারের সদস্যরাও থানায় চলে আসেন ৷

অভিযোগ, নির্যাতিতাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও সেই রাতে পুলিশ তাঁর অভিযোগপত্র জমা নেয়নি ৷ এমনকি রাতে তাঁর শারীরিক পরীক্ষারও ব্যবস্থা করেনি পুলিশ ৷ পরদিন ওই যুবতি থানায় এসে নিজের অভিযোগ দায়ের করেন ৷ এই ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেন জেলার পুলিশকর্তারাও ৷ কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে ওই রাতে যুবতিকে উদ্ধার করে আনা SI-কে সাসপেন্ড করা হয় ৷ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে মালদা থানার IC শান্তিনাথ পাঁজাকে নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার ৷ পুলিশ মূল দুই অভিযুক্তকে খুঁজতে শুরু করে ৷ তবে ঘটনার পর তারা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয় ৷ নিজেদের মোবাইল ফোনও ব্যবহার করছিল না তারা ৷ শেষ পর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে গাজোলের মাঝড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়বাগদিঘি পলিয়াপাড়ায় হানা দেন মালদা থানার IC৷ পুলিশ দেখেই নিজের গোপন ডেরা থেকে ধানক্ষেত দিয়ে দৌড়োতে শুরু করে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ৷ তবে সে পালাতে পারেনি ৷ তাড়া করে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ ৷ তবে পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি ৷

আজ ওই নির্যাতিতার মাসির বাড়ি এলাকার লোকজন মালদা থানায় হাজির হয় ৷ তারা IC শান্তিনাথ পাঁজার সঙ্গে দেখা করে বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান ৷ এক গ্রামবাসী বলেন, "ঘটনাটি নিয়ে গত 4-5 দিন ধরে আমরা ঘুরছি ৷ মালদা থানার IC ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ নির্যাতিতা নিজের অভিযোগপত্রে 5জনকে অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন ৷ কিন্তু IC বলছেন, এই ঘটনায় অভিযুক্ত দু'জন ৷ বাকি তিনজন কোনও দোষ করেনি বলে দাবি করছেন IC ৷ এদের মধ্যে পুলিশ একজনকে আটক করেও কোনও মামলা রুজু না করে ছেড়ে দিয়েছে ৷ আমরা নিশ্চিত, টাকাপয়সার বিনিয়মেই IC এই কাজ করছেন ৷ প্রত্যেক অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ৷ একথা আজ আমরা IC-কে জানিয়ে দিয়েছি ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details