মালদা, ৩১ মে : নেশায় বুঁদ হয়ে মাকে পিটিয়ে খুন করল ছেলে ৷ গতকাল গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের কচুপুকুর গ্রামে ৷ খবর পেয়ে রাতেই ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় হবিবপুর থানার পুলিশ ৷ চিকিৎসকরা বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ গ্রামবাসীরাই অভিযুক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন ৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ পুলিশের তরফে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে৷
মৃত বৃদ্ধার নাম বাসন্তী দাস ৷ বয়স ৬১ বছর ৷ কচুপুকুর গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা ৷ বেশ কয়েক বছর আগে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁর তিন ছেলে ৷ বড় দুই ছেলে পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন৷ ছোট ছেলে স্বপন দাসের কাছেই থাকতেন বৃদ্ধা ৷ স্বপন পেশায় গাড়িচালক৷ প্রতিদিন মদ্যপানের নেশা তার ৷ সেকারণে তার কোনও স্থায়ী কাজ জোটেনি, সে বিবাহিত ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই মদে বুঁদ হয়ে ঘরে ফিরে স্ত্রীকে মারধর করত স্বপন ৷ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন দীর্ঘদিন আগে ৷ এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে মা-ছেলেই থাকত ৷
নেশায় চূুড় হয়ে মাকে পিটিয়ে খুন ছেলের আরও পড়ুন...মালদায় বউদিকে খুন করে আত্মঘাতী দেওর, তদন্তে পুলিশ
এলাকার বাসিন্দা বিষ্ণু মিশ্র বলেন, “স্বপনের স্ত্রী দীর্ঘদিন আগে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন ৷ এনিয়ে মায়ের সঙ্গে ছেলের ঝামেলা লেগেই থাকত ৷ গত শনিবার স্বপন তার মাকে বেধড়ক মারধর করার পর নিজেই মাকে স্থানীয় বুলবুলচণ্ডী আরএন রায় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে ৷ গতকাল ছুটি হয়ে গেলে মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় ৷ কিন্তু গতকালও সে আবার মাকে বেধড়ক মারধর করে, তারপর মাকে নিয়ে যায় হাসপাতালে ৷ বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে চিকিৎসক তাঁকে মালদা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু স্বপন বন্ডে স্বাক্ষর করে মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে ফের বেধড়ক পেটায় ৷ ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয় ৷ গ্রামবাসীদের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গিয়ে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে ৷ গ্রামবাসীরাই স্বপনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন ৷ তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৷ বৃদ্ধার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে ৷”
হবিবপুর থানার আইসি অমিতাভ সরকার জানিয়েছেন, গতকাল রাতে কচুপুকুর গ্রাম থেকে এক বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত ছেলেকে৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি৷ বৃদ্ধার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হচ্ছে ৷