মালদা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : মাধ্যমিক পরীক্ষার হলে শিক্ষকদেরও মোবাইল নিয়ে ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এরকম সময়ে মোবাইল ব্যবহার করেই পরীক্ষা দিচ্ছেন মালদা কলেজের পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের জন্য স্মার্ট পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করল মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এবারই প্রথম এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করল মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ মানসকুমার বৈদ্য বলেন, "এবার আমরা পড়ুয়াদের অনলাইনে MCQ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এক্ষেত্রে ২০টি প্রশ্ন থাকে। তার জন্য আমরা পড়ুয়াদের ২৫ মিনিট সময় দিচ্ছি। এই পদ্ধতি চালু করা আমাদের কাছেও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু আমরা সাফল্যের সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ উত্তীর্ণ করেছি। ইতিমধ্যে স্নাতকস্তরের সেকেন্ড ও থার্ড ইয়ারের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আজ পাসকোর্সের পরীক্ষাতেও একই ব্যবস্থায় MCQ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পড়ুয়ারা। আজ সবচেয়ে বেশি ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সংখ্যাটি প্রায় ১৭০০। পরীক্ষার্থীরাও এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে উৎসাহিত। পরীক্ষা চলাকালীন সবার স্মার্টফোনের ইন্টারনেট কেমন চলবে, তা নিয়ে প্রথমে আমরাও ভয় পেয়েছিলাম। এই ব্যবস্থা চালু করার আগে আমরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। এই ব্যবস্থায় ৯৯ শতাংশ পড়ুয়াই আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছিলেন। এই কলেজের ৯৮ শতাংশ পড়ুয়ার কাছে নিজস্ব মোবাইল রয়েছে। তাঁরা নিজেদের মোবাইল ব্যবহার করেই পরীক্ষা দিচ্ছেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই আমরা MCQ পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করে দিচ্ছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা এই প্রশ্নপত্র আর্কাইভ করে রেখে দেব। প্রতি পরীক্ষাতেই এই ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে। এতে পড়ুয়ারা ভবিষ্যতে ওই আর্কাইভ থেকে নিজেদের তৈরি করতে পারবেন। এখন OMR হার্ডকপি প্রায় উঠে যাওয়ার মুখে। চাকরিসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় অনলাইন পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে। তাই কলেজে একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে পড়ুয়ারা আগে থেকেই নিজেদের তৈরি করে নিতে পারবেন। কলেজের নিজস্ব অ্যাপ এবং গুগল ব্যবহার করে এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা নিজেদের রোল নম্বর দিয়ে অ্যাপে লগ ইন করলে প্রশ্নপত্র খুলে যাবে। পরীক্ষা শেষ করে অনলাইনে উত্তর জমা দিলেই অ্যাপের ওই নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র বন্ধ হয়ে যাবে। এবার প্রায় ৫ হাজার পরীক্ষার্থী এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিচ্ছেন।"
বাণিজ্য বিভাগের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী লাবণি চৌধুরি বলেন, "বিষয়টি যেমন স্মার্ট, তেমনই ইউনিক। সবকিছুই কলেজের স্যারদের জন্য হয়েছে৷ এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা অত্যন্ত গতি পেয়েছে। আগে আমরা OMR শিটে পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষের জন্য এবার আমরা পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেজাল্ট পেয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো ব্যবস্থা।" সেকেন্ড ইয়ারের কেমিস্ট্রি অনার্সের ছাত্র অনির্বাণ বসু বলেন, "এটা আমাদের কাছে একটা নতুন অভিজ্ঞতা। সঙ্গে সঙ্গে রেজ়াল্ট। আগে যা ভাবাও যেত না। আগে আমরা OMR শিট পেতাম। সেখানে ভুল হলে তা ঠিক করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াত। কিন্তু এখানে ভুল হলে সেটা ঠিক করতে কোনও সমস্যা নেই। তাছাড়া কলেজে এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পরে আমাদের কোনও অসুবিধা হবে না।"