মালদা, 10 জুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে বন্যাত্রাণ দুর্নীতির তদন্তে ক্যাগকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ৷ নির্বাচনের আগে নিজেদের জনপ্রতিনিধিদের জেলযাত্রা আটকাতেই তৃণমূল সরকারের এই কৌশল বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস ৷ যদিও, এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি শাসকদলের নেতারা ৷
2017 সালে মারাত্মক বন্যার কবলে পড়ে মালদার অধিকাংশ ব্লক ৷ 15টির মধ্যে 13টি ব্লক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে উত্তর মালদা ৷ গঙ্গা, ফুলহর ও কোশি নদীর দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম ৷ ক্ষতির সম্মুখীন হন কয়েক লক্ষ্য মানুষ ৷ প্রচুর বাড়ি বন্যার ধ্বসে যায় ৷ নদীর জলে ডুবে যা প্রায় সব চাষের জমি ৷ এসব খতিয়ে দেখে দূর্গত মানুষজনের জন্য ক্ষতিপূরণ বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার ৷ দুই দফায় জেলায় 58 কোটি টাকা পাঠানো হয় ৷ কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে প্রকৃত দূর্গতদের বদলে সেই টাকা চলে যায় শাসকদলের নেতাদের পকেটে ৷
হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ৷ পরবর্তীতে হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা কংগ্রেস নেতা মোস্তাক আলম আরও দু’টি মামলা দায়ের করেন ৷ প্রথমে নীরব থাকলেও এই তিন মামলার জেরে বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হয় আরও কয়েকজনকে ৷ শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের জন্য কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়াকে নির্দেশ দেন ৷ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তদন্ত শুরু করেছে ক্যাগ ৷ 12 জুন তাঁদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ৷
আরও পড়ুন:বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা, আইওয়াশ বলে কটাক্ষ বিরোধীদের
কিন্তু, কংগ্রেসের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তৃণমূলের কেউ যাতে গ্রেফতার না হয় ৷ তার জন্য ক্যাগকে তদন্ত করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷ এ নিয়ে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ মাসুদ আলম বলেন, “2017 সালের বন্যায় উত্তর মালদায় বেশি ক্ষতি হয়েছিল ৷ আঠারোর পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত আমাদের দখলেই ছিল ৷ সেই সময় বিডিও-রা আমাদের প্রধানদের কাছ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নেন ৷ 2019 সালে সমস্ত পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে আসে ৷ টাকা কামানোর এই সুযোগ তারা ছাড়েনি ৷ তাদের সঙ্গে বিডিও এবং পঞ্চায়েতের আধিকারিকরাও এই টাকার প্রতি আকৃষ্ট হন ৷ সবাই একজোট হয়ে উপভোক্তাদের একটি ভুয়ো তালিকা তৈরি করেনস ৷ লোকসভা ভোটের মুখে তাঁরা সেই ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে ছিলেন ৷ এতে নির্বাচনি বিধিও লঙ্ঘন হয়নি ৷ এভাবে বন্যাত্রাণের 58 কোটি টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে ৷’’