মালদা, 17 এপ্রিল : কারও ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি হয়ে গেছে, কিন্তু এখনও হাতে আসেনি ৷ কারও আবার নয়া রেশন কার্ড তৈরিই হয়নি ৷ তাদের অনেকে আবার নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে বাড়িতে বসে রয়েছে ৷ এরা প্রায় সবাই কম আয়ের মানুষ ৷ এমনিতে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার ৷ তার উপর গোদের উপর বিষ ফোঁড়া লকডাউন ৷ সমস্ত কাজ বন্ধ ৷ কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না ৷ কারও ঘরে তেমন একটা খাবার মজুত নেই ৷ যা ছিল, 21 দিনের লকডাউনে শেষ ৷ এবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার লকডাউন ৷ এই সময় এই পরিবারগুলির রেশন সামগ্রীর বড্ড প্রয়োজন ৷ কিন্তু কার্ড না থাকায় মিলছে না সরকারি খাদ্যসামগ্রী ৷ ত্রাণ হিসাবে যা পাওয়া যাচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয় ৷ এই অবস্থায় প্রায় প্রতিদিনই প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছে এই মানুষগুলো ৷ আজও তাদের কয়েকজনের দেখা মিলেছে জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে ৷
আজ রেশনের খোঁজে প্রশাসনিক ভবন চত্বরে হাজির হয়েছিলেন মালদা শহরের মেনকা সাহা, গোবিন্দ রায়, কাঞ্চনটারের বেলা মণ্ডলরা ৷ এমনকি মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে নীলমকে কোলে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ঝলঝলিয়া এলাকার জ্যোৎস্না আঢ্যও ৷ প্রত্যেকের এক কথা, রেশন চাই ৷ কিন্তু কার্ড নেই ৷ মেনকাদেবী বলেন, “কার্ড তৈরি হয়ে গেছে ৷ কিন্তু এখনও আমাদের হাতে দেয়নি ৷ কয়েকদিন ধরে BDO অফিসে ঘুরছি ৷ কোরোনার জন্য অফিসের গেটে তালা মেরে দেওয়া হয়েছে ৷ আমার স্বামী রিকশা চালান ৷ আমি গৃহ পরিচারিকার কাজ করি ৷ লকডাউন শুরু হওয়ার পর দু’জনেরই কাজ বন্ধ ৷ হাতে টাকা-পয়সা যা ছিল সব শেষ ৷ ঘরে খাবারও নেই ৷ ছেলে-মেয়েদের দু’বেলা খাবার দিতে পারছি না ৷ তাই আজ ফের জেলাশাসকের দপ্তরে এসেছি ৷ কিন্তু এখানে বলা হচ্ছে, খাদ্য দপ্তরে যোগাযোগ করতে ৷ এভাবে আর কতদিন ঘুরতে হবে আমাদের ?”