মালদা, 29 অক্টোবর: মালিকপক্ষের রেষারেষিতে তিনদিন ধরে রতুয়া রুটে বন্ধ রয়েছে বেসরকারি বাস পরিষেবা। আর এনিয়েই ভয়ঙ্কর এক অভিযোগ উঠেছে মালদা জেলায়। রতুয়ার এক বাস মালিক অভিযোগ করেছেন, এই জেলায় 90 শতাংশ বেসরকারি বাস ডিজেলের পরিবর্তে কেরোসিনে চালানো হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ বাড়ছে ৷ অন্যদিকে, ডিজেল চালিত বাস মালিকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে মালদা বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
তবে পরিবহণ বোর্ডের এক সদস্য বলেন, "এনিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তারা তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ নেব।" রতুয়ার এক বাস মালিক অভিজিৎ সাহার অভিযোগ, "বর্তমানে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি 100 টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। আমার নিজের দুটি গাড়ি রয়েছে। দুটিই ডিজেলে চলে। কিন্তু এই জেলায় 90 শতাংশ বেসরকারি বাস অবৈধভাবে কেরোসিনে চলছে। অথচ প্রশাসন নীরব। ট্যাঙ্কে কেরোসিন ভর্তি একটি বাস আমরা এখানে আটকে রেখেছি। সে আমার গাড়ি মালদায় আটকে রেখেছে ৷ তার গাড়ি আমি এখানে আটকে রেখেছি। বাস কেন কেরোসিনে চলবে ? যদি সেটাই হয়, তাহলে প্রশাসনের তরফে ব্লু বুকে সেটা লিখে দেওয়া হোক।"
যদিও অভিজিৎবাবুর তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মালদা বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিবেক দাস। তিনি বলেন, "90 শতাংশ বাস কেরোসিনে চলছে বলে যে কথা বলছেন, অভিজিৎবাবু কি তা পরীক্ষা করে দেখেছেন ? তিনি অবৈধ কথাবার্তা বলছেন। তিনি রতুয়ার বাসিন্দা। নিজের প্রভাব খাটিয়ে, দুষ্কৃতীদের নিয়ে তিনি বাস বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন পিঠ বাঁচাতে তিনি কেরোসিনে বাস চলার অভিযোগ তুলছেন।" তিনি দাবি করেছেন, "অভিজিৎবাবু নাকি একটি কেরোসিন ভরা গাড়ি আটকে রেখেছেন। তিনি নিজেও ওই গাড়িতে কেরোসিন ভরে থাকতে পারেন। আবার বাসকর্মীদের কোনও ভুলও থাকতে পারে। তিনি কেরোসিন নিয়ে আমাদের আগে কোনও অভিযোগও করেননি। এসব অপকর্মের জন্য আমরা তার সংগঠনের সদস্যপদ খারিজ করেছি। সম্প্রতি 28টি বাসের পারমিট হয়েছে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক সেই বাসগুলির সময়সূচি দিতে পারেনি। সেই গাড়িগুলি আমরা কোনওরকমে চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে অবশ্য আমাদেরও কিছু গাফিলতি রয়েছে। অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কীভাবে রতুয়া রুটে দ্রুত গাড়ি চালানো যায়, তা নিয়ে আজকেই বৈঠকে বসব।"
মালদায় কেরোসিনে বাস চালানোর অভিযোগ বাস মালিকের বিরুদ্ধে আরও পড়ুন: বন্ধ স্কুলে মদের আসর, তালা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ প্রধান শিক্ষকের
পুরোনো জেলা পরিবহণ আধিকারিক বদলির পর এখনও নতুন কেউ সেই দায়িত্বে আসেননি। শোনা যাচ্ছে, সোমবার নয়া জেলা পরিবহণ আধিকারিক দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। তাঁর অবর্তমানে এনিয়ে পরিবহণ দফতরের কেউ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তবে পরিবহণ বোর্ডের সদস্য তৃণমূল নেতা অমল কিস্কু সাফ জানিয়েছেন, অভিজিৎবাবুর অভিযোগ মিথ্যে নয়। তিনি বলেন, "এই জেলায় কিছু বাস কেরোসিনে চলে। আমার কাছে সেই খবর আছে। এটা বেআইনি। আমি মাস দেড়েক পরিবহণ বোর্ডের সদস্য হয়েছি। বোর্ড মিটিংয়ে আমি জেলাশাসককেও বিষয়টি জানিয়েছি। এভাবে বাস চালানো হলে আমরা মালদা জেলায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। এসব বন্ধ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে। পরের মিটিংয়েও এনিয়ে আমি কথা বলব। কেরোসিনে গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে আমি যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।"