আদালতে যাওয়ার হুঁশিযারি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের মালদা, 21 মে:সরকারি কর্মচারীদের টিফিন ব্রেক নিয়ে নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আগামিকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন সরকারি কর্মচারীরা। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। পাশাপাশি দুর্নীতি ও ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারকে একগুচ্ছ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তিনি।
রবিবার দুপুরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের একটি মিছিল শহর পরিক্রমা করে। পরে মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামের দুর্গা কিংকর সদনে একটি কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। সেই কনভেনশনের মাঝেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। তিনি বলেন, "রাজ্য সরকারের ডিএ দেওয়ার ক্ষমতা নেই তেমন নয়। মুখ্যমন্ত্রী কি নিজের সম্পত্তি থেকে ডিএ দিচ্ছেন? রাজ্যের কোষাগার থেকে সরকারি কর্মচারীরা কাজ করে তার ন্যায্য পাওনা টুকু পাবে, সেটাই পুরো দেশজুড়ে হচ্ছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ডিএ দিতে পারছেন না ৷ এটা কোনও কথা নয়। সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসার দিন মুখ্যমন্ত্রীকেও আমাদের সঙ্গে বসতে অনুরোধ করেছিলাম।"
তাঁর কথায়, "টাকা আছে এবং সেটা কীভাবে দেওয়া যায় সেটাও আমরা হিসেব করে দেখিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। সমস্যা হচ্ছে সরকারের দেওয়ার মানসিকতা নেই। 100 দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকার সঙ্গে আমাদের টাকার কী সম্পর্ক? দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র সেই টাকা আটকে রেখেছে, তবে কি সেই দুর্নীতির তদন্ত আমাদের করতে দেওয়া হবে? যদি দেখা যায় আমাদের দাবির সঙ্গে 100 দিনের কিংবা আবাস যোজনার টাকার সম্পর্ক আছে তবে আমরা দায়িত্ব নিয়ে কেন্দ্রের থেকে সেই টাকা আদায় করব।"
আরও পডুন:প্রতিটি থানাকে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ 15 হাজার টাকা দেবে লালবাজার
রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মদত ছাড়া দুর্নীতি কি সম্ভব? এই অভিযোগের মধ্যে কীভাবে আপনারা নিজেদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন? এপ্রশ্নের জবাবে ভাস্করবাবু বলেন, "সরকারি কর্মচারীরা যদি মদত দিয়ে এই দুর্নীতি চালিয়ে নিয়ে যান, তবে আমরা সরকারকে চ্যালেঞ্জ করছি, ওই সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন আমরা পাশে থাকব। প্রয়োজনে ওই সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার লড়াইও হবে। আমরা চাই দুর্নীতি মুক্ত সমাজ হয়ে বেকার ছেলেরা চাকরি পাক, কর্মচারী নিজেদের হক পান। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।"
তিনি আরও জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের সেই ভাবেই দেখতে শিখুন, সবকিছুকে রাজনীতির দৃষ্টি দিয়ে মাপতে গিয়েই ভুল করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই উনি মঞ্চ থেকে বলছেন তৃণমূল রবীন্দ্রনাথ, আমার রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ। এই ধরনের মিথ্যাচার ও সর্বগ্রাসী মানসিকতা আজ বাঙালি জাতিকে খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে। বাংলা জাতিকে উঠিয়ে দাঁড় করানোর চলছে। বিগত 12 বছর ধরে পরিকল্পিতভাবে বাংলায় দুর্নীতিকে প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিকট আত্মীয় গতকাল দুর্নীতি নিয়ে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। সুতরাং নতুন করে তাঁদের কিছু বলার নেই।
আরও পডুন:তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের কর্মী সম্মেলনে মেলেনি টিফিন, ক্ষুব্ধ কর্মীরা
টিফিন টাইম প্রসঙ্গে ভাস্করবাবুর দাবি, কাজ যেমন আমাদের দায়িত্ব, তেমনি কাজের মাঝে বিরামটা পরবর্তী কাজটা ভালো করে করতে পারার জন্য অতিরিক্ত সময়। পৃথিবীজুড়ে এই স্বীকৃতি রয়েছে। ড: মনোজ পান্থ যে নির্দেশিকা গতকাল জারি করেছেন, তা আইন বিরোধী। সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের ভাষা রাখার। সেটা উনি এভাবে কেড়ে নিতে পারেন না। এর প্রতিবাদে আগামিকাল থেকে লাগাতার টিফিনের সময় প্রতিটি অফিসে কর্মচারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন। প্রয়োজনে এনিয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।"