মালদা, 6 জুলাই : লোকসভা নির্বাচনে 'ধাক্কা' খাওয়ার পরই তৃণমূল ছাড়ার হিড়িক পড়েছে । বিধায়ক, নেতা থেকে শুরু করে শয়ে শয়ে কর্মী রোজই প্রায় BJP-তে যোগ দিচ্ছেন । তৃণমূল সুপ্রিমোও পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, "যারা যাচ্ছে যাক । কাউকে আটকাব না ।" জেলায় জেলায় সংগঠন ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে । জাঁকিয়ে বসছে BJP । এই অবস্থায় দলের অন্দরেই কথা চলছে, "এবার কে যাচ্ছে ?"
দক্ষিণ মালদা । লোকসভার আগে পর্যন্ত এই জেলা কার্যত ছিল শুভেন্দুর দখলে । জেলা পরিষদ তৃণমূলের । ইংরেজবাজার পৌরসভা তৃণমূলের । লোকসভায় প্রার্থীও করা হয়েছিল জেলার নামজাদা ব্যক্তিকে । ডা.মোয়াজ্জেম হোসেন । জয়ের ব্যাপারে আশাবাদীও ছিলেন তিনি । কিন্তু, কংগ্রেসের 'গণি-মিথ' ভাঙতে পারেননি । সুজাপুর সহ গ্রামাঞ্চলের ভোটে জয় পান আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু) । শহরাঞ্চলে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি । তৃতীয় হন তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম । এমন কী, শহরের একটি ওয়ার্ডেও লিড পাননি তিনি । হারের পর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ি করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ।
শুভেন্দু যেখানে একাধারে মালদা দখলের চেষ্টা করছিলেন সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কীসের ? জানতে হলে একটু পিছিয়ে যেতে হবে ।
2017 । মালদা জেলা পরিষদের দখল নিতে চলেছে তৃণমূল । সমর্থন দরকার শুধু নীহাররঞ্জন ঘোষের । তিনি আবার বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে পৌরভোটে জিতেছেন । 2016-তে বাম-কংগ্রেস জোট তাঁকে সমর্থন করে । লোকমুখে এখনও প্রচলিত, নীহার শর্ত দিয়েছিলেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বকে । বলেছিলেন, ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ দাও, জেলা পরিষদের দখল দাও । কথা রেখেছিল তৃণমূল । কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে সরিয়ে ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান করা হয়েছিল নীহারকে । কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে নীহারের সম্পর্ক যে কতটা 'সুমধুর' তা তাঁরা নিজেরাও ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করে নেন । লোকসভা ভোটের আগে কৃষ্ণেন্দুর ক্ষমতা বাড়িয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো । স্বাভাবিকভাবেই কিছু মহল তা মানতে পারেনি । তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, এরপর থেকেই তলে তলে BJP-র সঙ্গে কথা চালাচ্ছিলেন অনেক নেতা ।