মালদা, 13 অগস্ট : আরও বিপদ ঘনিয়ে আসছে ভূতনিবাসীর । গতকাল রাতে কেশরপুরের যে এলাকায় গঙ্গার বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা ভেঙে গিয়েছে, তার থেকে এক কিলোমিটার দূরে কোশিঘাটেও বাঁধে ছোবল মারছে গঙ্গা । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেখানে ফেলা হচ্ছে বালির বস্তা । এখনও পর্যন্ত পুরানো বাঁধ ভূতনিকে বাঁচিয়ে রাখলেও শেষ পর্যন্ত সেই বাঁধ গঙ্গাকে সামলাতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর । এদিকে গঙ্গার জলস্তর বেড়েই চলেছে । আজ সন্ধে ছ’টায় চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাপিয়ে 25.51 মিটার উচ্চতায় বয়েছে নদী । সেচ দফতর জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে গঙ্গার জলস্তর স্থির হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে । বরং আরও কয়েকদিন জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের কাছে 10 কোটি টাকা দাবি করেছেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।
গতরাতে 1975 সালে তৈরি ভূতনি রিং বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা গঙ্গার জলের চাপে ভেঙে যায় । সেখানে এখন বাঁধ রক্ষার কাজ করা কিছুতেই সম্ভব নয় । এই মুহূর্তে সেচ দফতরেকে ভরসা জোগাচ্ছে ভেঙে পড়া বাঁধের প্রায় 500 মিটার ভিতরে থাকা পুরানো বাঁধ । তবে সেই বাঁধের অবস্থাও ভাল নয় । দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ওই বাঁধ দুর্বল হয়ে গিয়েছে । কিছু জায়গায় বাঁধ ভাঙাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা । এদিকে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতে কেশরপুরের প্রায় এক কিলোমিটার উজানে কোশিঘাটেও রিং বাঁধে শুরু হয়েছে ভাঙন । কিন্তু এবার শুখা মরশুমে সেখানেই বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছিল সেচ দফতর । গঙ্গার গ্রাস থেকে সেই কাজ বাঁচাতে সেচ দফতর নাইলনের ক্রেটে বালির বস্তা ভরে নদীতে ফেলতে শুরু করেছে ।
আজ বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে মানিকচকের বিডিও জয় আহমেদ বলেন, “গতকাল রাতে বাঁধ ভাঙার খবর পেয়েই সেচ দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসেন । রাত থেকে বাঁধ বাঁচানোর লড়াই শুরু করেছেন তাঁরা । এখন গঙ্গা পুরানো বাঁধে ধাক্কা মারছে । ওই বাঁধের কয়েকটি অংশ দুর্বল রয়েছে । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেসব মেরামত করা হচ্ছে । সেই কাজ করার পর ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে। আমার ধারনা, বাঁধের 20-30 মিটার ভেঙে গিয়েছে । কিন্তু পুরানো বাঁধের প্রায় 100 মিটার অংশ দুর্বল হয়ে রয়েছে । আমরা মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকে প্রচার শুরু করেছি । এলাকার স্কুলগুলিতে ফ্লাড সেন্টার খোলা হচ্ছে । কেউ চাইলে সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন । নদীর জল চরের কিছু এলাকায় ঢুকে পড়েছে । তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও হিসাব আমরা এখনও তৈরি করিনি । আগে বাঁধ বাঁচানোই লক্ষ্য আমাদের ।”