মালদা, ১৫ জুন: জৈষ্ঠ্য মাসের সংক্রান্তি থেকে পরবর্তী সাতদিন ধরে চলে ইতিহাস প্রসিদ্ধ রামকেলি মেলা ৷ প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষের সমাবেশে গমগম করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গৌড়ভূমি ৷ কোনও একসময় এই মেলায় শুধুমাত্র কড়ে আঙুল দেখে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতেন বৈষ্ণব পুরুষরা ৷ সেকারণে রামকেলির আরেক নাম গুপ্ত বৃন্দাবন ৷ রামকেলির ধুলোয় মিশে রয়েছে শ্রীচৈতন্যের ধর্মজাগরণের কাহিনি ৷ গত বছরের মতো এবছরও করোনা বিধিনিষেধের জেরে বন্ধ হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই মেলা ৷ তবে রীতি মেনে সোমবার রামকেলিতে শ্রীচৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করা হয় ৷
মালদা-মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথ ধরে মালদা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামকেলি ৷ বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ের মধ্যেই এর অবস্থান ৷ ষোড়শ শতাব্দীতে ধর্মজাগরণের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেন শ্রীচৈতন্য ৷ সেই কর্মসূচিতে তিনি নবদ্বীপ থেকে পদব্রজে বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ ১৫১৪ সালের জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তির আগের দিন তিনি গৌড়ভূমে উপস্থিত হন ৷ তিনদিন তিনি গৌড়ে অবস্থান করেন ৷ তৎকালীন নবাব হুসেন শাহের মন্ত্রী পরিষদের অন্যতম দুই সদস্য সাকর মল্লিক ও দাবির খাস চৈতন্যদেবের সংস্পর্শে এসে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন ৷ এরপর থেকে সাকর মল্লিক সনাতন ও দাবির খাস রূপ গোস্বামী নামে পরিচিত হন ৷ পরবর্তীতে তাঁরা সেই তমাল গাছের নীচে একটি মন্দির নির্মাণ করেন ৷ চৈতন্যদেবের গৌড়ে আগমন উপলক্ষ্যে রামকেলিতে মেলা শুরু করেন নিত্যানন্দ গোস্বামী বংশের গোস্বামী অটলবিহারী দেবানন্দ প্রভুপাদ ৷ সেই মেলাই রামকেলি মেলা নামে এখনও চলে আসছে ৷