মালদা, 11 জুলাই : সাইবার প্রতারণার দায়ে ফের উঠে এল মালদার যুবকের নাম । অনলাইনে প্রতারণা করে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বামনগোলা থানার এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশ । জেলা আদালতের অনুমতিক্রমে তাকে পঞ্জাব নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
ধৃত যুবকের নাম শুভঙ্কর ধর । বয়স 23 বছর । বাড়ি বামনগোলা থানার পাকুয়াহাট সংলগ্ন ইন্দো-বাংলা সীমান্তের খুটাদহ গ্রামে । বাবা শিবতোষ ধর পেশায় কৃষক । মা সীমা ধর গৃহবধূ । শুভঙ্কর তাঁদের একমাত্র ছেলে । স্নাতক স্তর উত্তীর্ণ হয়ে সম্প্রতি গৃহ শিক্ষকতা করত সে । তার মোবাইলে গেম খেলায় আসক্তি ছিল । ওই ফোনে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও লিঙ্ক করা রয়েছে । সেই অ্যাকাউন্টেই সম্প্রতি 23 লাখ 80 হাজার টাকা অনলাইনে জমা পড়ে । ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ টাকা তুলেও নেওয়া হয় । পঞ্জাবের এক ব্যক্তিকে অনলাইনে প্রতারণা করে তার অ্যাকাউন্ট থেকে এই টাকা সরানো হয়েছিল ।
ওই ব্যক্তি পাঠানকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । তদন্তে পঞ্জাব পুলিশের সামনে উঠে আসে শুভঙ্করের নাম । শেষ পর্যন্ত বামনগোলা থানার পুলিশের সহায়তায় শুভঙ্করকে গ্রেফতার করে পঞ্জাব পুলিশ । শুভঙ্করকে সাতদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার জন্য জেলা আদালতে আবেদন জানান ওই রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকরা । সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য দায়রা বিচারক রূপেন্দ্রনাথ বসু ।
এই বিষয়ে পঞ্জাব পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে কিছু না জানালেও মালদা জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, “পঞ্জাবের এক ব্যক্তি পাঠানকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাঁর এটিএম কার্ড ব্লক হয়ে গিয়েছিল । তারপর তাঁর কাছে একটি ফোন আসে । বলা হয়, তাঁর এটিএম কার্ড আবার চালু করে দেওয়া হবে । তার জন্য এটিএম কার্ডের চার অঙ্কের সংখ্যাটি জানাতে হবে । ওই ব্যক্তি সেই নম্বর জানিয়ে দেন । এর 24 ঘণ্টার মধ্যেই ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে 23 লাখ 80 হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় ।"
তদন্তে দেখা যায়, সম্পূর্ণ টাকাটাই পাকুয়াহাটের শুভঙ্কর ধরের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে । সেই টাকা 24 ঘণ্টার মধ্যে ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হয়েছে । এই ঘটনায় পঞ্জাব পুলিশ শুভঙ্করের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 420 এবং আইটি অ্যাক্টের 66 ডি ধারায় মামলা রুজু করে ।
এদিকে সীমা ধর বলেন, “ছেলে বিএ পাস করার পর গৃহ শিক্ষকতা করে । আর কিছু করে না । তবে ওর মোবাইল গেম খেলার নেশা রয়েছে । একদিন ব্যাঙ্ক থেকে বাড়িতে লোক আসে । জানতে চায় ছেলে কী করে । আমি জানাই, কয়েকটা ছেলেকে পড়ানো ছাড়া ছেলে আর কিছু করে না । পরে শুনি, ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তা বের করেও নেওয়া হয়েছে । কিন্তু ও কোনও মেসেজ পায়নি । ব্যাঙ্ক থেকে জানিয়েছিল, 20-22 লাখ টাকা ওর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল । এখন শুনছি সেটা 30-35 লাখ । ছেলে তার অ্যাকাউন্টে এই টাকা দেখতেও পায়নি । পঞ্জাব পুলিশ আমাদের বাড়ি যায়নি । মঙ্গলবার বামনগোলা থানার পুলিশ ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় । ছেলের একটাই ভুল, মোবাইলের সব মেসেজ ডিলিট করে দিয়েছে ।”