মালদা, ১৩ নভেম্বর : স্থায়ীকরণসহ সরকার নির্ধারিত বেতনের দাবিতে আজ থেকে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করল রাজ্যের প্রতিটি কলেজের অস্থায়ী কর্মীরা ৷ রাজ্যের অন্য জায়গার সঙ্গে মালদা জেলার কলেজগুলিতেও অস্থায়ী কর্মীদের এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে ৷ প্রথম দিনই এই ধর্মঘটের অল্পবিস্তর প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে মালদা কলেজে ৷ তবে তার জন্য জেলার কলেজেগুলিতে পঠন-পাঠনে তেমন কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি ৷
স্থায়ীকরণসহ সরকার নির্ধারিত বেতনের দাবি, আন্দোলন কলেজের অস্থায়ী কর্মীদের - ধর্মঘট কলেজের অস্থায়ী কর্মীরা
আজ থেকে ধর্মঘট শুরু করেছে রাজ্যের প্রতিটি কলেজের অস্থায়ী কর্মীরা ৷ স্থায়ীকরণ সহ সরকার নির্ধারিত বেতনের দাবিতে তাদের এই আন্দোলন ৷ তবে তার জন্য কলেজেগুলিতে পঠনপাঠনে তেমন কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি ৷
ধর্মঘট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ অস্থায়ী কর্মচারী সমিতির জেলা আহ্বায়ক তনয়কুমার ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্যের কলেজগুলিতে প্রায় পাঁচ হাজার অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন ৷ কলেজগুলি মূলত এই কর্মীদের উপরেই নির্ভর করে চলছে ৷ 2001 সাল থেকে এই কর্মীদের কলেজ পরিচালনা সমিতির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয় ৷ তখন থেকেই আমরা কলেজগুলিতে পরিষেবা দিয়ে আসছি ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের নির্দিষ্ট কোনও বেতন পরিকাঠামো কিংবা কর্মনিশ্চয়তাও নেই ৷ এনিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছি ৷ এর আগে আমরা বিকাশ ভবন ও নবান্ন অভিযান করেছি ৷ শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হয়েছি ৷ কিন্তু আমাদের সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি৷ মালদা কলেজে 19টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে ৷ প্রতিটি ডিপার্টমেন্টেই অনার্স পড়ানো হয় ৷ রয়েছে চারটি হস্টেল ও একটি সেন্ট্রাল লাইব্রেরি৷ এই লাইব্রেরিতে মাত্র দু’জন লাইব্রেরিয়ান আছেন৷ বাকি কাজ আমাদেরই করতে হয়৷ সেখানে 14 জন অস্থায়ী কর্মী কাজ করেন৷ আজ এখনও পর্যন্ত সেই লাইব্রেরি খোলা যায়নি ৷ বিসিএ ডিপার্টমেন্টেও ক্লাস বন্ধ হয়ে গেছে ৷ হস্টেলে রান্নার কাজ বন্ধ ৷ পড়ুয়ারা সেখানে রান্না করছে ৷ মালদা কলেজে পুরো সময়ের 13 জন সহ মোট 54জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন ৷ আপাতত কলেজ ফান্ড থেকে আমাদের সামান্য কিছু বেতন দেওয়া হচ্ছে ৷ গত 15 জুলাই রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে আমাদের জন্য নতুন বেতন পরিকাঠামো প্রকাশ করেছে ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি ৷ আমরা চাই, সেই বেতন পরিকাঠামো দ্রুত চালু করা হোক ৷ যতক্ষণ না সরকার আমাদের দাবিগুলিতে সবুজ সংকেত দিচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের ধর্মঘট আন্দোলন চলবে ৷”
এদিকে মালদা কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মঘটের প্রথম দিন পঠনপাঠনে খুব একটা প্রভাব না পড়লেও আগামী দিনে তা পড়তে বাধ্য ৷ কারণ, কলেজের ক্লাসরুম খোলার দায়িত্বেও রয়েছে এই কর্মীরা৷ শুধু তাই নয়, বেশ কিছু বিভাগের পঠনপাঠনে তাদের উপরেই ভরসা করতে হয় ৷ লাইব্রেরির কাজও তাদের মাধ্যমেই করা হয় ৷ অস্থায়ী কর্মীরা যদি তাড়াতাড়ি ধর্মঘট প্রত্যাহার না করে, তবে এসব ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়তে শুরু করবে ৷