মালদা, 9 জুন :রাজ্য সরকার অনেক আগেই নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, চলতি বছর 1 জুন থেকে রাজ্যের কোথাও 75 মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না। মালদা জেলা প্রশাসন ও ইংরেজবাজার পৌরসভার তরফেও এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়। কিন্তু বুধবার বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের সামগ্রী সেই পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগেই দেওয়া হয়েছে (Prohibited plastic carrybags are used in government schools)
প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবসায়ীরা প্রশাসন ও পৌরসভার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁদের মজুত থাকা পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বিক্রি করার জন্য মাস দু'য়েক সময় দেওয়া হোক। কিন্তু সেই সময় তাঁদের কোনও আর্জি কানে তোলেনি জেলা কিংবা পৌর প্রশাসন।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ঝামেলায় পড়ে যান আড়াপুর জেটিএসি গার্লস হাইস্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সুদীপ্তা কর। তিনি বলেন, "গতকাল থেকেই আমাদের স্কুলে মিড ডে মিল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্যেক পড়ুয়াকে চাল, ডাল, আলু, চিনি আর সাবান দেওয়া হচ্ছে। আমরাই মিড ডে মিলের সামগ্রী প্রদানের কাজ দেখাশোনা করছি। আমাদের কাছে পুরোনো কিছু পাতলা ক্যারিব্যাগ থেকে গিয়েছিল। তাই আমরা তাতেই এসব দিচ্ছি। আগামীতে আর পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে এসব দেব না।"
আরও পড়ুন :মুখ্যমন্ত্রীর সভার পর প্য়ারেড গ্রাউন্ডের হাল ফেরানোর দাবিতে সরব বিধায়ক
মালদা শহরের মেয়েদের নামী স্কুল বার্লো গার্লস হাইস্কুল। সেখানেও এক ছবি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার তো এই ঘটনার দায় কার্যত প্রশাসনের উপরেই চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমাদের স্কুলে 800 পড়ুয়া মিড ডে মিলের সামগ্রী পাচ্ছে। এত পড়ুয়াকে 250 গ্রাম করে জিনিসপত্র মেপে, আলাদা করে প্যাক করার জন্য নির্দিষ্ট মাপের ক্যারিব্যাগ আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। একটা জায়গা থেকে চটজলদি ক্যারিব্যাগ নিয়ে আসতে হয়েছে। প্রশাসন এবং পৌরসভার কাছে আমাদের আবেদন, মিড ডে মিলের সামগ্রী দেওয়ার জন্য সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ কিংবা কাগজের প্যাকেট তাঁরাই যেন আমাদের দেন।"
শহরের আরেকটি নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ললিতমোহন শ্যামমোহিনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুপদ রায় বলেন, "গতকাল থেকে মিড ডে মিলের সামগ্রী প্রদান শুরু হয়েছে। চারদিন চলবে। আমরা প্রতি মাসে সরকার নির্ধারিত মানের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগেই এসব দিয়ে থাকি। কিন্তু এবার এমনটা কেন হল তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তেমন হলে আগামীকাল থেকেই আমরা ক্যারিব্যাগ পালটে দেব।"
নির্দিষ্ট সময়সীমার পরেও বহাল তবিয়তে চলছে নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগের ব্যবসা আরও পড়ুন :সিরিটি শ্মশানের সংস্কারের কাজ শুরু করল কলকাতা পৌরনিগম
পুরো বিষয় নিয়ে ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "75 মাইক্রনের নীচে থাকা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহারে সরকারি নির্দেশিকা 1 জুন থেকে লাগু হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যাতে তাঁদের মজুত থাকা পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ জলদি বিক্রি করে দিতে পারেন, তার জন্য এখনই আমরা কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সও নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে। তবে বিভিন্ন স্কুলে মিড ডে মিলে পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের খবর পেয়েছি। এই বিষয়টি নিয়ে আমি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলছি।"