মালদা, 9 জানুয়ারি : শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশে হাতে হাত দিয়ে বসে থাকতে হল বামনগোলা ব্লক তৃণমূলের একাংশকে ৷ প্রধানের ক্ষমতা কাড়তে সম্প্রতি এই পঞ্চায়েতের কিছু তৃণমূল সদস্য মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের চার সদস্যবিশিষ্ট উপসমিতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসে ৷ তার ভিত্তিতেই শুক্রবার তলবি সভা আহ্বান করেন বিডিও সঞ্জিৎ মণ্ডল ৷ কিন্তু এরপরেই রেখা টিকাদার (সরকার) সহ আরও কয়েকজন উপসমিতির সদস্য এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ চেয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেন৷ আবেদনের ভিত্তিতে তলবি সভায় স্থগিতাদেশ জারি করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা৷ ফলে শুক্রবার নির্ধারিত তলবি সভার আয়োজন করা যায়নি৷ গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত প্রধান দলীয় নেতৃত্বের দিকে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন৷ যদিও তাঁর প্রশ্নকে তেমন আমল দিতে চাননি বামনগোলা ব্লক তৃণমূল সভাপতি ৷
গত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের 19টি আসনের প্রতিটিতে জয় পায় শাসকদল ৷ বিরোধীশূন্য বোর্ডে চারজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয় উপসমিতি ৷ মনে রাখতে হবে, পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে উপসমিতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ উপসমিতির সহায়তা ছাড়া কোনও আর্থিক কিংবা অন্যান্য বিষয় অনুমোদন করা পঞ্চায়েত প্রধানের পক্ষে কার্যত অসম্ভব৷ যাই হোক না কেন, নির্বাচনের পর দু’বছরের বেশি সময় স্বাভাবিক গতিতেই চলেছে মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্ম৷ কিন্তু বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডের তাল কাটতে শুরু করেছে৷ সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে প্রধান রঞ্জিতা হালদার মজুমদারের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ব্লক প্রশাসনের কাছে চিঠি দেন বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্য ৷ সেই আনাস্থা প্রস্তাবের তলবি সভা ডেকেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে পিছিয়ে আসে ব্লক প্রশাসন ৷ পরে জানা যায়, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী আড়াই বছরের আগে কোনও প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে অপসারিত করা যায় না৷ বিষয়টি জানার পরেই শাসকদলের এক তাবড় নেতার পরামর্শে সেই চিঠি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ৷ আরও জানা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত আইন বলে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত প্রধানকে অপসারিত করা সম্ভব নয় দেখে প্রধান বিরোধীরা অন্য ছক ধরে৷ তারা প্রধানের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিতে উপসমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসেছে৷ সেই প্রস্তাবের চিঠি দেওয়া হয় বিডিওকে৷ তার ভিত্তিতে শুক্রবার তলবি সভা ডাকেন বিডিও ৷