মালদা, 18 মে: ভোটের মুখে ঘাসফুলের অস্বস্তির শিকড় আরও গভীরে ৷ ত্রাণ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে পোস্টারে ঠেয়ে গেল গোটা এলাকা ৷ পোস্টারে তাঁকে গ্রেফতারের দাবিও তোলা হয়েছে ৷ মুখ বাঁচাতে এই ঘটনায় 'বিরোধীদের চক্রান্ত' শব্দবন্ধকেই ঢাল করছে শাসক শিবির ৷ যা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে ৷
এদিন সকালে হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা অঞ্চলে স্থানীয় বড়োল বাজারের চারদিকে পোস্টার সাঁটানো দেখতে পাওয়া যায় ৷ সমস্ত পোস্টারই তৃণমূল পরিচালিত হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুজাতা সাহার বিরুদ্ধে ৷ কোথাও নেত্রীকে গ্রেফতারির দাবি, কোথাও দল থেকে হটানোর ডাক, কোথাও আবার তাঁকে প্রার্থী করলে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলকে ভোট না দেওয়ার হুঁশিয়ারি ৷ কে বা কারা এই পোস্টারগুলি সেঁটেছে, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও শাসকদল যে এই ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ তবে স্থানীয়দের অনুমান, সুজাতাদেবীর কাজকর্মে ক্ষিপ্ত মানুষই এই কাজ করেছে ৷ সুজাতা সাহার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের বিস্তর অভিযোগ ৷ 2017 সালের বন্যা ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম প্রথম সারিতে উঠে আসে ৷ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক সহায়তা পাঠানো হলেও, অভিযোগ, সেই ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তিন কোটি 54 লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয় ৷
এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা রুজু করে হয়েছে ৷ সেসব এখনও বিচারাধীন ৷ তবে ত্রাণের টাকা নিয়ে দুর্নীতি করার দায়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহা-সহ শাসকদলের বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রীকে আদালতের নির্দেশে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ক্যাগ (সিএজি) ৷ আট সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি ৷ যদিও এলাকাবাসীর দাবি, সোনামনি সাহা সামান্য বোড়ে মাত্র, এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড সুজাতা সাহা ৷ তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে বহুবার সরব হয় ওই এলাকার মানুষ ৷ এমনকী তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশও তাঁকে গ্রেফতারির দাবিতে এখনও সরব ৷ কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে সেই সুজাতা সাহাকেই ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নির্বাচিত করে দলের রাজ্য নেতৃত্ব ৷