মালদা, ২৮ জুন: রাস্তা ঠিক হবে, পানীয় জলের সমস্যা থাকবে না, নিকাশি নিয়ে আর কাউকে ভাবতে হবে না, এমনকী সব গরিব মানুষকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটপ্রার্থীরা ৷ ঠিক সেই মুহূর্তে পরিবেশকর্মীরা দাবি তুলেছেন, গ্রাম বাংলাকে আরও সবুজ করার প্রতিশ্রুতিও দিক রাজনৈতিক দলগুলি ৷ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির তালিকায় থাকুক জলাভূমি সংরক্ষণ, নদী-সহ অন্যান্য দূষণ রোধ, ভূগর্ভস্থ জলস্তর সুরক্ষিত রাখা, কৃষিজমিতে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ কমানোর বিষয়গুলিও ৷ কারণ, এতেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুরক্ষিত থাকবে ৷ কাকতালীয়ভাবে গোটা দেশের 10 লক্ষ বুথ সভাপতির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে সম্প্রতি একই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ৷ ফলে এবার পরিবেশকর্মীদের দাবি কিছুটা হলেও পূরণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
পরিবেশকর্মী হিসাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের তুহিনশুভ্র মণ্ডল রাজ্য তথা দেশে পরিচিত নাম ৷ বিদেশেরও একাধিক সেমিনারে গৌড়বঙ্গ তথা রাজ্যের পরিবেশগত সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন তিনি ৷ কীভাবে এসব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন সারাক্ষণ ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি জানালেন, পরিবেশ রক্ষার ইস্যু গ্রামীণ ভোটের স্লোগান হওয়া উচিত ৷ এখন গ্রামীণ পরিবেশও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ রাজস্থানের মরুপ্রান্তর থেকেও বাংলার গ্রাম ও শহরের উষ্ণতা অনেক বেশি৷ তাপপ্রবাহ মারাত্মক আকার নিয়েছে ৷ নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে ৷ ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেক নীচে নেমে গিয়েছে ৷ গ্রামেও এখন আগের মতো গাছপালা দেখা যায় না ৷ গাছ কাটা হচ্ছে৷ পরিবেশ নষ্ট হলে গ্রাম বা শহর বলে আলাদা কিছু থাকে না ৷ তাই এখন থেকে পরিবেশও ভোটের ইস্যু হোক৷ সবুজ ভবিষ্যতই ভোটের পার্থক্য গড়ে দিক ৷
এই পরিবেশকর্মীর কথায়,"এটা ঠিক যে গাছ লাগানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প রয়েছে৷ বনমহোৎসব রয়েছে ৷ গাছ লাগানো হয় প্রচুর ৷ কিন্তু তার পরিচর্যা আর হয় না ৷ ফলে অধিকাংশ গাছই মারা যায় ৷ আমাদের কথা আর কাজে মিল থাকতে হবে ৷ এর যত পার্থক্য হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ততই বিপন্ন হবে ৷ এই সময় পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ৷ গাছ কমে যাওয়ার সঙ্গে কিন্তু বৃষ্টির পরিমাণও কমে গিয়েছে ৷ ফলে ব্যাপকভাবে ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হচ্ছে ৷ এতে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক, ফ্লুরোসিসের দেখা মিলছে ৷ এটা বিপজ্জনক ৷”