মালদা, 19 সেপ্টেম্বর:অনলাইন প্রতারকদের হাত পড়ে গিয়েছে আধার কার্ডেও ৷ আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেম ক্লোন করে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকও গায়েব করে দিচ্ছে এই প্রতারকরা ৷ প্রায়শই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে এই রকম তথ্য ৷ গত কয়েক মাসে মালদায় এইরকমই বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে ৷ তাই মানুষকে সাবধান করতে পথে নেমে পড়েছে পুলিশ ৷ গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক বার্তাও প্রচার করা হচ্ছে ৷ সাইবার অপরাধীদের ঠেকাতে সচেতনতা প্রচার অন্যতম পদক্ষেপ ৷
সাইবার প্রতারণার শিকার:সম্প্রতি মালদার এক সিভিক ভলান্টিয়ারও প্রতারণার জালে পা দিয়ে প্রায় 20 হাজার টাকা খুইয়েছেন ৷ তিনি জানান ব্যাংক থেকে তাঁর নামে একটি ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল ৷ কিন্তু তিনি সেই কার্ড ব্যবহার করতে চাননি ৷ কার্ডটি বন্ধ করতে কয়েকবার ব্যাংকেও যান ৷ একদিন ফোনে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর ক্রেডিট কার্ড একবারের জন্যও ব্যবহার হয়নি ৷ ফোনের উলটোদিকে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ব্যাংক কর্মী পরিচয় দেন ৷
ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার উত্তর দেন, তিনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে চান না ৷ সেটি বন্ধ করে দিতে চান ৷ তখনই তাঁর কাছে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর জানতে চাওয়া হয় ৷ তিনি নম্বর জানান ৷ তখন ফোনে তাঁকে বলা হয়, তাঁর ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ৷ কনফারমেশনের জন্য একটি ওটিপি তাঁর ফোনে যাবে ৷ সেই ওটিপি জানালেই তাঁর ক্রেডিট কার্ড বন্ধ হয়ে যাবে ৷ ফোনে ওটিপি আসার পর তিনি তা ওই ব্যক্তিকে জানান৷ খানিক পরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে 19 হাজার 400 টাকা গায়েব হয়ে যায় ৷
কারা করছে প্রতারণা ?প্রতিদিন এভাবেই প্রতারণার শিকার হয়ে চলেছে বহু মানুষ ৷ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে মালদা জেলা পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে পাঁচ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে ৷ তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করা যায়নি ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এসব ঘটনায় জামতারা গ্যাং জড়িত ৷ দেওঘর থেকে প্রতারণার জাল ছড়াচ্ছে ৷ গ্রাহকদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করেও বিভিন্ন ব্যাংকের সার্ভিস পয়েন্ট থেকেও টাকা তুলছে ৷ গ্রাহকদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কোথায় থেকে পাচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্য এখনও কিছু নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ ৷
আরও পড়ুন:সাইবার অপরাধে লোপাট লক্ষাধিক টাকা, ফেরৎ এনে দিল পুলিশ
কী ভাবে বাঁচবেন সাইবার প্রতারকদের হাত থেকে: সাইবার প্রতারকদের হাত থেকে বাঁচতে আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক লক করা ছাড়া উপায় নেই ৷ জেলা পুলিশের কর্তাদের সেটাই বক্তব্য ৷ প্রত্যেকের আধার কার্ডে তাঁর আঙুলের ছাপ লিংক করা হয়েছে ৷ সেই আঙুলের ছাপ দিয়েই তাঁরা ব্যাংক থেকে এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেমে টাকা তোলেন ৷ এই পেমেন্ট সিস্টেমে গ্রাহকরা ইচ্ছে করলেই নিজেদের বায়োমেট্রিক লক করতে পারেন ৷ তার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে ৷ পরবর্তীতে সেই বায়োমেট্রিক আনলক না করা পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে না ৷ এই প্রসঙ্গেই কালিয়াচকের এসডিপিও সম্ভব জৈন বলেন, "এই প্রতারণা থেকে বাঁচার সবচেয়ে সহজ উপায়, আধার কার্ডকে বায়োমেট্রিক লক করে রাখা ৷ এনিয়ে আমরা গোটা জেলা জুড়ে সচতনতা প্রচার শুরু করেছি ৷ একটি মানুষও যাতে সাইবার প্রতারণার শিকার না হয়, তার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ৷"
আরও পড়ুন:সক্রিয় জামতারা গ্যাং, সাইবার প্রতারণা রুখতে মানুষকে সচেতনে তৎপর পুলিশ