মালদা, 12 অক্টোবর : উৎসবেও আতঙ্ক । মহামায়ার বোধনের পরেই ফের ছোবল মারল গঙ্গা । এবার পঞ্চানন্দপুরে । এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মনে ফের ফিরে এসেছে দেড় দশক আগের আতঙ্ক । বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা সেচ দফতর ।
এবার গঙ্গার তীব্র ভাঙনে দিশেহারা মানিকচক ও কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম । ওই সব গ্রামে এখনও নদীপাড়ে ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছে অনেকে । এবার গঙ্গার নজর পড়েছে কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের পঞ্চানন্দপুর এলাকায় । গতকাল দুপুরে হঠাৎ পঞ্চানন্দপুর বাসস্ট্যান্ডের পিছনে ভাঙন শুরু হয় । পাড় ভাঙতে শুরু করে নদী । ছুটে আসে এলাকার লোকজন । আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আমিনুর আলমও । প্রথম দিন ভাঙনের তীব্রতা খুব বেশি না থাকলেও এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে এলাকাবাসী ।
মালদা জেলা শুধু আম-রেশমের জেলা হিসাবেই পরিচিত নয় । আশির দশকের শেষ থেকে চলতি শতকের প্রথম পর্যন্ত পঞ্চানন্দপুরের জন্য মালদাকে ভাঙনের জেলা হিসাবেও চিনেছিল গোটা দেশ । তীব্র নদী ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে একটি গোটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা । কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আয়তন অর্ধেক বা তারও কম হয়ে গিয়েছে । তলিয়ে যাওয়া কেবি ঝাউবোনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন আজ কার্যত পথের ভিখারি । একই পরিস্থিতি বাকি ভাঙন দুর্গতদেরও । 2003 পর্যন্ত ভয়াল নদী ভাঙনের সাক্ষী থেকেছে পঞ্চানন্দপুর । তারপর নদী তার পুরোনো প্রবাহ ধরে ফেললে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এলাকার মানুষজন ।
আজও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন এলাকায় গঙ্গার জলে ঘূর্ণি রয়েছে । পাড়ের পাশে জলে ফেনা । নদী চেনা মানুষজনের কথায়, এসব ভাঙন শুরু হওয়ার লক্ষণ । স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ শেখ বলেন, “একসময় গঙ্গার ভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম নদীতে তলিয়ে গিয়েছে । চোখের সামনে নদীতে ঢুকে গিয়েছে বিশাল বাজার । 15-16 বছর ভাঙন বন্ধ ছিল । গতকাল ফের ভাঙন শুরু হয়েছে । চরের দিকে অল্প কাটলেও পাড়ে ভাঙন বেশি । আবার ভয়ের বিষয় । যেভাবে নদী কাটার চিহ্ন দেখছি, তাতে মুশকিল হতে চলেছে । জন্ম থেকে এখানে বাস করি ।”